ছবি: সংগৃহীত
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জুড়ে গত কয়েক দিনের নিরন্তর বিক্ষোভের ছায়া পড়ল সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনে।
তীব্র কয়লা সঙ্কটে সাগরদিঘির পিডিসিএল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কয়লার পর্যাপ্ত জোগান না পেলে অন্য ইউনিটটিও চালানো সম্ভব নয় বলে বুধবার জানিয়ে দিলেন সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার অলোক দত্তরায়। তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনের বিক্ষোভে স্টেশনগুলির ক্ষতবিক্ষত অবস্থা। কয়লা বোঝাই রেক আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মজুত কয়লায় আর কত দিন উৎপাদন অব্যাহত রাখা যাবে বলা মুস্কিল।’’
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মণিগ্রাম-সহ আশপাশের ১০টি স্টেশনে ভাঙচুরের ফলে ওই পথে ট্রেন চলাচল পাঁচ দিন ধরে থমকে রয়েছে। আসছে না কয়লা বোঝাই রেক। কয়লার জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনও থমকে গিয়েছে। পিডিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে কয়লার জোগান না এলে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন চালু ইউনিটটিও বন্ধ করে দিতে হবে।
মণিগ্রাম রেল স্টেশন ছুঁয়েই সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার রেক চলাচল করে। কিন্তু দিন কয়েক আগে বিক্ষোভের জেরে ওই স্টেশনে ভাঙচুরের ফলে সিগন্যালিং ব্যবস্থাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘সিগন্যালিং সিস্টেম’ মেরামত করা না গেলে ওই লাইনে ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। পাশের স্টেশন মহিষাশুর নওপাড়াতেও আপ লাইনে ফিসপ্লেট উপরে ফেলা হয়েছে।
সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪টি ইউনিটে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। প্রয়োজন হয় প্রতি ঘণ্টায় ৯৬০ মেট্রিক টন কয়লা। দিনে মোট ২৩০৪০ মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন হয় ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার সঙ্কট অবশ্য নতুন নয়। কয়লার ঘাটতিতে বছরের অধিকাংশ সময়েই দু’টি ইউনিট চালু থাকে।
সম্প্রতি পাকুড়ে কোল ব্লক কেনার পরে কয়লার জোগান কিছুটা স্বাবাবিক হয়েছিল। মাস দুয়েক ধরে তাই চারটি ইউনিটই চালু ছিল। গড় উৎপাদনও বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৬০০ মেগাওয়াট।
মালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জিতেন্দ্র প্রসাদ বলেন, “মণিগ্রাম স্টেশনে আগুন লাগানো না ভাঙচুরের ফলে সিগন্যালিং সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই দিন সাতেকের আগে কিছু করা সম্ভব নয়।”