এই থিম নিয়ে বিতর্ক। ফাইল চিত্র
চাপে পড়ে নির্ধারিত দিনের এক দিন আগেই বন্ধ করে দেওয়া হল ধুবুলিয়ার কালীপুজো মণ্ডপে ‘মানসিক হাসপাতাল’ প্রদর্শন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মণ্ডপের ‘থিম’ হিসেবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রদর্শন চলার কথা ছিল। সেই মতো প্রচারও করা হয়েছিল।
কিন্তু বুধবার রাত থেকেই ধুবুলিয়ার ১২ নম্বর গ্রুপের যুবকবৃন্দ ক্লাবের তরফে মাইকে প্রচার করা হতে থাকে ‘আজই শেষ’। সেই সঙ্গেই বলা হতে থাকে যে মানসিক রোগীদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি তৈরি করার জন্যই এই ধরনের ‘থিম’ করা হয়েছে। ক্লাবের তরফে বরাবরই জানানো হয়েছে, শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জন। তাই ‘থিম’ প্রদর্শন চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ দাবি করতে থাকেন, বুধবার পর্যন্তই প্রদর্শন চলার কথা ছিল।
কালীপুজো রবিবার হলেও ওই মণ্ডপে মানসিক হাসপাতালের থিম প্রদর্শন শুরু হয় সোমবার থেকে। সেখানে মণ্ডপের ভিতরে মানসিক হাসপাতালের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য কালীনারায়ণপুরের পেশাদার দলকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। তারা মানসিক রোগী, নার্স, চিকিৎসক সেজে অঙ্গভঙ্গি করে দর্শকদের আনন্দ দিতে থাকে। মনোরোগীদের কষ্ট অনুভব করার বদলে দর্শকেরা হেসে গড়িয়ে পড়তে থাকেন। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। বহু বিশিষ্ট ও সাধারণ মানুষ নিন্দায় সরব হন। মনোবিদ, মনোরোগীদের অধিকার আন্দোলনের কর্মী থেকে স্বাস্থ্যকর্তা, সকলেই জানান, এই ধরনের প্রদর্শন মানুষকে আরও ভুল বোঝাবে। যে পরিবেশ তুলে ধরা হয়েছে, তা আদৌ বাস্তবসম্মত নয়। এতে মানসিক রোগীদের প্রতি দর্শকের সহমর্মিতা উদ্রেকের বদলে হচ্ছে উল্টোটাই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু হওয়ার পরেই চাপে পড়েছিলেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে খোঁজখবর করা হতে থাকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এর পরই বিতর্ক এড়াতে এক দিন আগেই প্রদর্শন বন্ধের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও ক্লাবের সম্পাদক সাধন হালদার দাবি করছেন, “আমরা বুধবার পর্যন্তই থিমটা রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম। কোনও চাপের কারণে এক দিন আগে বন্ধ করিনি।” তবে সেই সঙ্গেই তাঁর বোধোদয়, “এর পরে যদি এমন কোনও স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে থিম করি, তা হলে আমরা সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেই সবটা আয়োজন করব।”