চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। ছবি: ফেসবুক।
চোখে ‘প্রোটেক্টিং গ্লাস’, মুখ থেকে খুলে গলায় ঝোলানো মাস্ক, হাতে গিটার আর গানের সুরে প্রতিবাদ। চিকিৎসকদের পেশার নেতিবাচক দিক নিয়ে গাওয়া নচিকেতার গানের সুর একই রেখে শুধু শব্দ বদলে গান গেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। কোভিড অতিমারির সময়ে চিকিৎসকদের অবদান নিয়ে তাঁর গাওয়া গান সেই সময় সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। সেই চিকিৎসকের মৃত্যু হল মাত্র ৩৭ বছর বয়সে। মঙ্গলবার দুপুরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিৎসকের অকালমৃত্যুতে শোকস্তব্ধ চিকিৎসক মহল।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাসিন্দা ছিলেন চিকিৎসক অনির্বাণ। রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির থেকে পড়াশোনার পর ডাক্তারি পড়তে যান উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। তার পর রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল থেকে করেছিলেন এমডি পিজিটি প্যাথোলজি। সমাজে চিকিৎসকদের অবদানের পাশাপাশি, বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা ও স্বাস্থ্য কার্ডে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অনির্বাণ। রাজ্যের নতুন প্রজন্মের চিকিৎসকদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
রোগী দেখা তাঁর পেশা ছিল। নেশা ছিল, কাজের ফাঁকে গিটার গলায় ঝুলিয়ে গান গাওয়া। মিশুকে, হাসিখুশি চিকিৎসকের আলাদা করে একটি পরিচিতি ছিল নেটাগরিকদের মধ্যে। তাঁর মৃত্যুর খবর ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে।
২০১৮ সাল থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অনির্বাণ। কোভিডকালে গান বেঁধে আক্রান্তদের লড়াইয়ের মনোবল জুগিয়েছেন তিনি। সেই সময়ে চিকিৎসকেরা কোথাও আক্রান্ত হলে প্রতিবাদ করেছেন রাস্তায় নেমেও। গানেই প্রশ্ন তুলতেন দেশে চিকিৎসা খাতে ব্যয়-বরাদ্দ নিয়ে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতেন গানে-গানে। কিন্তু, অকালেই থেমে গেল সেই প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। মঙ্গলবার বহরমপুরেই চিকিৎসকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।