হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগী পরিবার, দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে থানায়। নিজস্ব চিত্র।
বাংলা না জানলে চিকিৎসার জন্য রোগীকে বিহার যাওয়ার ‘পরামর্শ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বুধবার সেই ‘পরামর্শ’কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল নদিয়ার কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে রোগী এবং রোগীর পরিবারের বচসা এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত হল। পরে রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের হয় কল্যাণী থানায়। পাল্টা অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ‘সিজার’ হওয়ার কথা ছিল উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ার বাসিন্দা এক অন্তঃসত্ত্বার। তাঁকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সেই সময় এক চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বাকে শারীরিক সমস্যার কথা জানতে চাইলে, তিনি হিন্দিতে কথা বলতে থাকেন। এর পর চিকিৎসক নাকি তাঁকে বাংলায় কথা বলার অনুরোধ করেন। অন্তঃসত্ত্বা জানান, তিনি বাংলা জানেন না। তাঁর অভিযোগ, এর পরেই নাকি তাঁকে চিকিৎসক বলেন, ‘‘বাংলা না জানলে বিহারে গিয়ে চিকিৎসা করান।’’
এ নিয়েই চিকিৎসকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় প্রসূতির পরিবারের। তত ক্ষণে রোগীর পরিবারের এক জন মোবাইলে রেকর্ড করতে থাকেন এই দৃশ্য। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই মোবাইলটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পরে রোগী নিয়ে ওই পরিবার কল্যাণী থানায় কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘ভাষাজনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসা বিভ্রাট হলে তার দায় কে নেবে? রোগীর পরিবার সব সময় ‘ভিক্টিম’ কার্ড খেলেন। যেটা এক প্রকার ব্ল্যাকমেল বলা যেতে পারে।’’
অন্য দিকে, চিকিৎসার কাজে বাধা দেওয়া এবং বিনা অনুমতিতে মোবাইলে ছবি তোলায় পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কল্যাণী থানার পুলিশ।