‘মেলা’ ভাঙতে সাফ়াই নদী

পানা দেখতে যাবেন নাকি? ২০ টাকা, ২০ টাকা। ফেল কড়ি, টোটো হাজির। তার পর চাপড়া বাজার থেকে সোজা তালুকহুদা গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪৩
Share:

পরিষ্কার করা হয়েছে জলঙ্গি। —নিজস্ব চিত্র।

পানা দেখতে যাবেন নাকি? ২০ টাকা, ২০ টাকা।

Advertisement

ফেল কড়ি, টোটো হাজির। তার পর চাপড়া বাজার থেকে সোজা তালুকহুদা গ্রাম।

জলঙ্গি নদীর উপর রাতারাতি জমে যাওয়া পানায় তৈরি হয়ে যায় সেতু। আর তার উপর দিয়েই চলছিল হাঁটাচলা। থিকথিকে ভিড় জমে যায় এমন অবাক করা পানার সেতু দেখতে। খবর ছড়িয়ে পড়েছিল আশপাশের গ্রামেও। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের তরফে লোক লাগিয়ে পরিষ্কার করা হল নদী।

Advertisement

গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে চাপড়ার বৃত্তিহুদা গ্রামের পাশে জলঙ্গী নদীতে জমতে থাকে কচুরিপানা। শনিবার তা চরম আকার নেয়। প্রায় দু’কিলোমিটার জুড়ে জমাট বাঁধা এই কচুরিপানার উপর দিয়ে মানুষ হেঁটে পারাপার করতে শুরু করে। খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে ভিড় করতে থাকে। সস্তার আইসক্রিম, ঝালমুড়ি পসরা সাজিয়ে নদীর দু’পাড়ে বসে যায় মেলা। শেষে ভিড় সামলাতে লাঠি হাতে ‘নদীতে’ নামতে হয় পুলিশকে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি যে কে সেই। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাড়ি করে লোকজন আসতে থাকে। ভিড় ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যায় পুলিশ। এরই মধ্যে তিন জন জলে পড়ে যায়। পুলিশ নদীর দু’পাড়ে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করে দেয়। মাইকে প্রচার করে। কিন্তু লাভ হয়নি।

এলাকার বাসিন্দা চিন্টু শেখের কথায়, ‘‘ভাবতে পারেন মানুষ কি না কচুরিপানার উপর দিয়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছে। এমন আজব কাণ্ড দেখতে মানুষ যে ভিড় করবে, এটাই স্বাভাবিক।’’ তিনিই জানান, অনেকে আবার পবিত্র জল মনে করে বোতল বন্দি করে বাড়িও নিয়ে গিয়েছে।

শেষমেশ প্রশাসনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেমন করেই হোক এই কচুরিপানা সরিয়ে ফেলতে হবে। সেই মতো শুরু হয় প্রস্তুতি। মঙ্গলবার থেকে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক নামিয়ে দেওয়া হয় কচুরিপানা সরিয়ে ফেলার কাজে। টানা তিন দিনের চেষ্টায় ভাঙা হয় সেতু।

মেলা ভেঙে যাওয়ায় চেনা চরিত্রে ফিরে এসেছে তালুকহুদা গ্রামও। বিডিও অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিড় ক্রমে বাড়ছিলই। কচুরিপানা সরিয়ে ফেলতে না পারলে যে কোনও দিন বড় বিপদ ঘটে যেত।’’

যদিও ফের নয়া বিপত্তি। এ দিক পরিষ্কার করতেই স্রোতের টানে পানা গিয়ে পড়েছে নবদ্বীপের ভাগীরথীতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement