বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কেন্দ্রে নিয়োগে অসঙ্গতির অভিযোগ।
দিন কয়েক আগে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) অধীনে থাকা একাধিক কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে (কেভিকে) নিয়োগ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল রাজ্যের কৃষি দফতর এবং আইসিএআর। কিন্তু সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইন্টারভিউ নেন এবং যাঁরা চাকরি পান, তাঁদের নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। এ বার ওই নিয়োগ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসিএআর আটারির কলকাতার অফিস থেকে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, নিয়োগ নিয়ে ওঠা নানা অভিযোগের জবাব না দেওয়া পর্যন্ত সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেওয়া হবে না। আইসিএআর-এর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, নিয়োগে আপত্তি জানিয়ে রাজ্যের কৃষি দফতর-সহ অনেকেই চিঠি পাঠিয়েছিল। সে সবের জবাব উপাচার্য এখনও দেননি। উপাচার্য এবং কার্যকরী রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, সে সবের জবাব দিতে হবে। রাজ্যের অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া কেন কেভিকে’তে নিয়োগ করল, সেই প্রশ্নও করা হয়েছে চিঠিতে। ওই সব প্রশ্নের জবাব না আসা পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেওয়া হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের মাঝামাঝি নাগাদ একাধিক কেভিকে-তে বিভিন্ন পদে ১০ জনকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন জারি হয়। আর তারপর থেকেই বিতর্ক চলছে। বিজ্ঞাপন বার হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বিসিকেভির প্রাক্তন ছাত্র গোবিন্দ রায় মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, প্রাণী সম্পদ ও মৎস্যের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞের দু’টি পদ ছিল একটি কেভিকে-তে। কিন্তু ওই দু’টি পদের পরিবর্তন করে মৃত্তিকা বিজ্ঞান ও কৃষি সম্প্রসারণ বিশেষজ্ঞের পদ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
গোবিন্দ বলেন, ‘‘উপাচার্য ধরণীধর পাত্রের ভাইপো রাজীব পাত্রকে নিয়োগ করা হয়েছে। কৃষি অনুষদের ডিন শ্রীকান্ত দাসের ছেলে সায়কও নিয়োগপত্র পেয়েছেন। কার্যকরী রেজিস্ট্রার কৌশিক ব্রহ্মচারীর ছাত্র নিয়োগপত্র পেয়েছেন। ওই নিয়োগ হওয়ার পর তাই এই স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানাই।’’
শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার বিসিকেভি ইউনিটের আহ্বায়ক সুনীল ঘোষ বলেন, ‘‘আমি আগেই বলেছিলাম নিয়ম না মেনে নিয়োগ করলে চাকরিপ্রাপ্তদের বেতন পেতে সমস্যা হবে। এমনকী চাকরি চলেও যেতে পারে। এখন কর্তৃপক্ষ সেটাই টের পাচ্ছেন।’’ এ ব্যাপারে উপাচার্যকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। ফলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে কৃষি অনুষদের ডিন শ্রীকান্ত দাস বলেন, ‘‘স্বজনপোষণের প্রশ্নই ওঠে না। আমার ছেলে যোগ্য তাই চাকরি পেয়েছেন। এর মধ্যে অন্যায়ের তো কিছুই নেই।’’ রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ করা ঠিক হচ্ছে না। জবাব চাওয়া হলে জবাব দেব।’’