মাটির গানে বর্ষবরণ
চৈতন্য থেকে লালন হয়ে রবীন্দ্রনাথ- নববর্ষের প্রথম সকালে নবদ্বীপে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এ ভাবেই নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানাল। বিদ্যার্থী মণিমেলার উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ছাতিমতলায় নবদ্বীপের শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি, নাট্যকর্মীরা প্রতি বছরের মতো এ বারেও সমবেত ভাবে বর্ষবরণের আয়োজন করেছিলেন। নীতিশ রায়ের প্রাক্কথন দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে গান, কবিতা, আবৃত্তি, নৃত্যে বছরের প্রথম সকালটি আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের নবদ্বীপ শাখা পয়লা বৈশাখ সকালে প্রাচীন মায়াপুরে জাতীয় বিদ্যালয় জিএসএফপি স্কুলে বর্ষবরণের আয়োজন করে। বকুলতলা প্রাক্তন ছাত্র সম্মিলনীর তরফে বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে রাধাচূড়া গাছের তলায় বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়েছিল। অন্য দিকে, নবদ্বীপে গঙ্গার পূর্বপাড়ে আমঘাটার কাছে সুপ্রাচীন বৌদ্ধস্মৃতি বিজড়িত সুবর্ণবিহারে লালন ফকিরের দারুমূর্তিকে সামনে রেখে সারাদিন ধরে মাটির গানে বর্ষবরণ করেন বাউল শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে লালনের গান শোনান প্রবীণ মোসলেম ফকির, নিত্যনন্দ বাউল, নিখিল খ্যাপা, ইলামা।
প্রান্তিকের নাটক
‘প্রান্তিক’ নাট্যসংস্থার নতুন নাটক, ‘জীবনসাথী @ বালুকাবেলায়’ মঞ্চস্থ হল গত ২৭ এপ্রিল বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে। নাট্যকার সুমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশনা ও আবহ প্রিয়াঙ্কুশেখর দাস। ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে বাইরে। স্ত্রী অথবা স্বামীও বেঁচে নেই। এমন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার একাকী জীবন তো দুর্বিসহ। জীবনের এমন বালুকাবেলায় যদি তাঁরই মতো একা হয়ে পড়া বিপরীত লিঙ্গের কোন জীবনসাথী মিলে যায় তবে তো মুশকিল আসান। কর্মসূত্রে প্রবাসী বা দূরে থাকা সন্তানরাও অপরাধবোধ, বা দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই পায়। মূলত এই বিষয় নিয়ে নাটক ‘জীবনসাথী @ বালুকাবেলায়’।
রেউই সমাবেশ
কৃষ্ণনগরে দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে তোলা নিজস্ব চিত্র।
রবিবার বিকেল তিনটের সময় কৃষ্ণনগর দ্বিজেন্দ্র মঞ্চে ‘সপ্তসুর কলস্বর’ এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল রেউই সমাবেশ। তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাসাহিত্য, আকাশ-সুস্মিতার ‘জলাঙ্গি জনপদের কবি’ ও ‘স্বরূপের একতারা’ অ্যালবাম প্রসঙ্গে আলোচনা হয় এ দিনের অনুষ্ঠানে। আলোচনায় যোগ দেন সুধীর চক্রবর্তী, তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্বেতা চক্রবর্তী। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে রেউই সম্মান দেওয়া হয় সুশোভন অধিকারী, পীতম ভট্টাচার্য, অনসূয়া মুখোপাধ্যায় ও অনিন্দিতা গোস্বামীকে।
যুগাগ্নির ৪২
গত পয়লা মে বহরমপুরের নাট্যসংস্থা ‘যুগাগ্নি’ ৪২ বছরে পা দিল। ৪২তম প্রতিষ্ঠা দিবসের সন্ধ্যায় বহরমপুর রবীন্দ্রসদনের ভিতরের মঞ্চে যুগাগ্নি মঞ্চস্থ করে নাটক ‘অবশ্য কর্তন’। যুগাগ্নির প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ সরকার ২০১৩ সালের পয়লা মে প্রতিষ্ঠা করেন আবৃত্তির সংস্থা ‘বাচিক শিল্পচর্চার মুক্ত দিগন্ত’। গত শুক্রবার ওই আবৃত্তি সংস্থার তৃতীয়তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন করা হয় বহরমপুর রবীন্দ্রসদনের মুক্তমঞ্চে। বিকাল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে আলোচনা, আবৃত্তি, গান ও আলেখ্য— একক ও সমবেত।
ছান্দিকের ‘চালচিত্র’
চালচিত্র নাটকের একটি দৃশ্য।— নিজস্ব চিত্র।
গত ২৯ এপ্রিল বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল ছান্দিকের পুরুষবর্জিত নতুন নাটক ‘চালচিত্র’। রাজশ্রী বসু অধিকারীর গল্প অবলম্বনে নাট্যরূপ দিয়েছেন ছান্দিকের পরিচালক শক্তিনাথ ভট্টাচার্য। ওই নাটকের মোট ৯টি চরিত্রের কলাকুশলীরা সকলেই মহিলাদের উপর ঘটমান নানা ধরনের পীড়ন, অত্যাচার, অবিচার ও লাঞ্ছনার রকম ফের ফুটিয়ে তুলেছেন ওই নাটকে। কাটোয়া ও সাগরদিঘির পর বহরমপুরে চালচিত্রের এটাই ছিল প্রথম প্রযোজনা।
নৃত্য উৎসব
গত ২৩ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল, তিন দিন ধরে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল নৃত্য উৎসব। নৃত্যশিল্পী পারমিতা মৈত্রের সংস্থা ‘নৃত্যাঙ্গন’ ওই উৎসবের আয়োজন করেছিল। অসীম বন্ধু, লুনা সরকার ও পারমিতা মৈত্র ও তাঁদের ছাত্রছাত্রীরা ওই উৎসবে কত্থক, ওড়িশি, ভারতনাট্যম ও মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করেন। জেলাব্যাপী আয়োজিত নৃত্য প্রতিযোগিতায় ৪টি বিভাগে মোট ১২ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
নিভৃত যতনে
সম্প্রতি ‘উপাসনা’র ১৫ তম বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান হল বহরমপুর রবীন্দ্রসদনের ভিতরের মঞ্চে। রবীন্দ্র বিষয়ক নৃত্যের উপরে ‘নিভৃত যতনে’ নামে সমবেত নৃত্য পরিবেশিত হয়। গিটারের সুরে ওই নৃত্যানুষ্ঠান দর্শকদের মন কাড়ে। ওই মঞ্চেই ‘ধ্রুবক’ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, আধুনিক গান ও নৃত্য পরিবেশন করে।
রেপার্টরির প্রযোজনা
গত পয়লা মে সন্ধ্যায় বহরমপুরে জিটিআই স্কুলে ‘গুপ্তচর’ ও ‘উল্কি’ নামে দু’টি নাটক মঞ্চস্থ করল বহরমপুর ‘রেপার্টরি থিয়েটার’। নাটক দু’টির অনুবাদ করেছেন বাসুদেব চক্রবর্তী ও দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। সামগ্রিক পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।
ভ্রম সংশোধন
২০ এপ্রিল এই বিভাগে ‘ধ্রুবকের আড্ডা’ ভুল করে ছাপা হয়েছে ‘সপ্তকের আড্ডা’। অনিচ্ছাকৃত ওই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।