গোলমালের ভয়ে। নিজস্ব চিত্র
গত জুলাইয়ে তাঁর নেতৃত্বে পুরপ্রধান সৌমিক হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল ডোমকল পুরসভায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রদীপ চাকিকে সরতে হল পদ থেকে। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, প্রদীপ জ্বালিয়ে নিজেই নিভে গেল প্রদীপ!
তৃণমূলের অন্দরের খবর, সৌমিককে সরিয়েও পুরপ্রধান হতে না-পারার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন প্রদীপ। ফলে নতুন পুরপ্রধানের নানা কাজে বাগড়া দিচ্ছিলেন তিনি। যা ভালভাবে নেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে দাবি তৃণমূলের একাংশের। আর প্রদীপ বলছেন, ‘‘অন্যায় মানতে পারিনি, নানা দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই হয় তো সরিয়ে দেওয়া হল।’’
ডোমকল পুরসভা গঠনের পর থেকেই পুর-নাগরিকদের মনে আশা জেগেছিল, পিছিয়ে থাকা এই সীমান্ত এলাকার উন্নয়ন হবে। বদলাবে ডোমকল শহরের চেহারা। কিন্তু অভিযোগ, উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে ডোমকল পুরসভায়। এমনটাই দাবি, সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের একাংশের। আর সেই টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দফায় দফায় গন্ডগোল বেধেছে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে। এমনকি, রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেনকেও সরতে হয়েছে পুরপ্রধানের পদ থেকে। তবে তাঁর অপসারণের পরেও মসৃণভাবে চলেনি পুরসভা। বিশেষ করে প্রদীপ চাকি পুরসভার নানা কাজে বাগড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের এক জেলা নেতার। তিনি বলেন, ‘‘পুরপ্রধান না হতে পেরে প্রদীপ দলেরই পুরপ্রধানের পিছনে লেগেছিলেন। এ বার ফল ভুগল হল তাঁকে।’’পুরপ্রধান জাফিকুল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘যা হয়েছে দলের নির্দেশে হয়েছে। যা করেছি তা অন্য পুর কাউন্সিলরদের সম্মতিতে।’’ আর প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন বলেছেন, ‘‘যা হয়েছে সেটা এই মুহূর্তে ঠিক হয়েছে বলে আমার মনে হয়নি, এখন চারদিকে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। ফলে এই ঘটনা থেকে সুবিধা নিতে পারে বিজেপি।’’ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি মুখ খুলতে নারাজ। জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের খান বলছেন, ‘‘পুরসভার বিষয়টি ডোমকলের স্থানীয় বিষয়। সেখানকার নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যা ভাল বুঝেছেন সেটাই করেছেন।’’