—প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত তিন বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গেল। এবছর এখনও পর্যন্ত জেলার ১৮ টি ব্লক ও ১০টি পুরসভা এলাকায় সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। নিম্নচাপের বৃষ্টির কারণে জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতির যে ক্রমশ অবনতি হচ্ছে তা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরাও।
পঞ্চায়েত ভোটের পর নতুন বোর্ড গঠন শেষ হয়েছে। বহু পঞ্চায়েতেই প্রধান হিসেবে নতুন মুখ এসেছে। তাঁদের অনেকেই আবার জন প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম দায়িত্ব পেয়েছেন। ফলে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটাও বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে তাঁদের কাছে। তা ছাড়া বেশ কিছু পঞ্চায়েতে বোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে এখনও কিছুদিন বাকি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিদায়ী বোর্ডের পঞ্চায়েত সদস্যদের বেশির ভাগই পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়া বন্ধ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গির মোকাবিলা হবে কী ভাবে তা নিয়ে বিপাকে পড়েছে প্রশাসনও। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় অনুন্নত নিকাশি, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প না থাকা, ডেঙ্গি সচেতনতার অভাব ইত্যাদি বিষয়গুলি মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। যদিও প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরাসরি পঞ্চায়েতের ভূমিকা নেই। তবে এলাকায় জল জমতে না দেওয়ার ব্যাপারে সচেতনতার মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রচার প্রধান, উপপ্রধান ও সদস্যদেরই উদ্যোগী হয়ে করতে হয়।
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বহু জায়গাতেই জল জমতে শুরু করেছে। অধিকাংশ পঞ্চায়েতেই নেই নিকাশি ব্যবস্থা। ফলে পুজোর আগে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, শহরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার প্রচার সম্ভব হলেও, গ্রামীণ এলাকায় সেই কাজ করাটা বেশ কঠিন। বর্তমানে শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকাতেই আক্রান্ত বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জবা ভট্টাচার্য বলেন, "বিভিন্ন জায়গায় ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের সচেতন করছি। জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ ও তা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।’’ জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠী বলেন, "জেলাজুড়ে সর্বত্র ফিভার ক্লিনিকের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। যে এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে কারণ খুঁজে বের করা হচ্ছে।" তাঁর দাবি, "তিন সপ্তাহ আগে যেভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছিল এখন তা অনেকটাই কমেছে।’’