এ বার মরসুমের শুরুতেই গত বছরকে ছাপিয়ে যাচ্ছে ডেঙ্গি। প্রতীকী চিত্র।
বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে গত বছর দাপট দেখিয়েছিল ডেঙ্গি। সে বার মুর্শিদাবাদে আট হাজারের উপরে মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার মরসুমের শুরুতেই গত বছরকে ছাপিয়ে যাচ্ছে ডেঙ্গি। যার জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। গত বছর জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এ জেলায় মাত্র ৬৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৫ জন। এই পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি। ইতিমধ্যে পুরসভা কর্তৃপক্ষ এবং ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করা হয়েছে।’’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বহরমপুরে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সভাকক্ষে বহরমপুর পুরসভার ডেঙ্গি প্রভাবিত এলাকার কাউন্সিলর ও পুর স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ পার্থপ্রতিম গুপ্ত, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল-সহ অন্য আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার জেলা পরিষদের সভাগৃহে মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত ব্লকের যুগ্ম বিডিও, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক, জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক কোনও এলাকায় কত জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন, সে সব তথ্য তুলে ধরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বছরভর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে মশানাশক স্প্রে করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুরসভা এলাকাতেও এলাকা বাছাই করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, মশানাশক স্প্রে করার কাজ হচ্ছে। সে সব কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না সে দিকে নজরদারির কথা বলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, গত বছর লালগোলা ও ভগবানগোলা ১ ব্লকে ডেঙ্গির প্রভাব সব থেকে বেশি ছিল। গত বছর সারা জেলায় যেখানে ৮৩১০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে লালগোলাতেই ১৭৭১ জন এবং ভগবানগোলা ১ ব্লকে ৬০৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বছরও ভগবানগোলা ১ ব্লক ও লালগোলায় ডেঙ্গির প্রভাব সব থেকে বেশি। এখনও পর্যন্ত ভগবানগোলা ১ ব্লকে ৪০ জন, লালগোলায় ৩৫ জন এবং বহরমপুর পুরসভা এলাকায় ১২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, আগে থেকে ব্লকে ব্লকে ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হয়। এবারে প্রতিটি ব্লকেই রক্তে কত প্লেটলেট রয়েছে সেই পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ফলে ডেঙ্গির রোগীর প্লেটলেট কত রয়েছে তা দেখে ব্লকে চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে। রোগীকে রেফার করার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে।