পাশাপাশি। সুব্রত-দেবাশিস।
তাঁকে রুখতে বহু চেষ্টা করেও পারেননি এলাকার বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা। দলের নির্দেশে সাগরদিঘিতে নয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি হয়েছেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই সুব্রত সাহাকে পাশে বসিয়ে দলের মধ্যে সাগরদিঘিতে চলতে থাকা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তৃণমূলের নয়া ব্লক সভাপতির হুঁশিয়ারি কার্যত হজম করতেই হল সুব্রতবাবুকে।
দেবাশিসের কড়া বার্তা, “এক জন কর্মী মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, লোকের দরজায় দরজায় ঘুরে নেতাকে জেতায়। কিন্তু জেতার পর নেতারা আর ওই কর্মীর খেয়াল রাখেন না। তাদের কথা শোনে না। এ জিনিস কিন্তু সাগরদিঘিতে আর চলবে না।”
প্রায় দু’সপ্তাহ আগে নয়া সভাপতি ঘোষিত হলেও এই প্রথম সাগরদিঘিতে মুখোমুখি হলেন সুব্রত ও দেবাশিস। সুব্রত বিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন দেবাশিস সহ পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ নেতারাই। দু’জনেই পৃথক অফিস খুলে দল চালাচ্ছেন। সুব্রত বিরোধীরা জমায়েত হচ্ছিল দেবাশিসের পাশে। এই অবস্থায় দু’টি পৃথক কর্মসূচিতে এসেও শেষে এক মঞ্চে এলেন সন্ধ্যায়। সংবর্ধনা সভা রূপ নিল ঐক্যের মঞ্চে।
দেবাশিস বলেন, “২০১১ সালে যারা জেলায় এক মাত্র সাগরদিঘি আসনে দলকে জিতিয়েছিলেন, আজ তাঁরা অনেকেই দলের থেকে দূরে। তাঁরা ফিরে আসুন। যদি কোনও ভুল করে থাকে আমি দলের পক্ষ থেকে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনারা ফিরে আসুন।”তিনি বলেন, “সাগরদিঘিতে এত উন্নয়ন সত্ত্বেও সর্বত্রই শুনছি তৃণমূলের নিন্দা। তার একটাই কারণ, দলে নেতৃত্বের সঙ্গে কর্মীদের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই প্রধানদের বলব বুথে বুথে যান। মানুষের পাশে দাঁড়ান। এটাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন তৃণমূল। সদস্যরা ৪ বছর পঞ্চায়েতে বসে বসে খেয়েছেন। এ বার দলের কাজ করুন।”
দেবাশিসবাবু যে দলনেত্রীর আত্মীয়, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সুব্রতবাবুও তাঁকে নিজের ইচ্ছে মতো দল পরিচালনার কথা বলেছেন। তবে সুব্রতর অনুরোধ, ‘‘কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে দলের মধ্যে বলুন। দলকে ভাঙতে দেব না। যদি প্রয়োজন হয় পদত্যাগ করব।’’