প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের প্রথম বিধানসভা নির্বাচন থেকেই বামেরা ক্ষমতায় ডোমকলে। মাঝে একবার কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলেও ১৯৭৭ সালে আবারও নিজেদের দুর্গ দখল করে তারা। সিপিএমের দাবি, দেশ এবং রাজ্য জুড়ে নানা চড়াই-উতরাই হয়েছে, কিন্তু ডোমকল এক অন্য ইতিহাস তৈরি করে রেখেছে বামপন্থার লড়াইয়ে। আগাগোড়াই বাম দুর্গ এবং কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত ডোমকলের। এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের লড়াই এমন একটা পর্যায় গিয়েছিল যে একটা নির্বাচনের দিন ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল রাজনৈতিক হিংসায়। রাজ্যে পালাবদল হলেও ডোমকলের ক্ষমতায় প্রথম পাঁচ বছর দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। পরবর্তী সময়ে সৌমিক হোসেন তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিলেও আনিসুর রহমানের কাছে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে তাকে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, এই জয়ে সিপিএমের কৃতিত্ব যতটা তার থেকে অনেকটাই বেশি কৃতিত্ব খোদ আনিসুর রহমানের। রাজনৈতিক মহলের ধারণা ডোমকলের আমজনতার কাছের মানুষ এবং কাজের মানুষ হিসেবে আনিসুরের প্রভাব অনেকটাই বেশি।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তৎকালীন জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের ছেলে সৌমিক হোসেনের হয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীও প্রচারে নেমেও শেষ রক্ষা হয়নি। কংগ্রেস সেই বিধানসভায় তিন নম্বরে নেমে গিয়ে যায়। আর তারপরে পুরসভার নির্বাচনে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে তৃণমূল। শাসকদল হওয়ার সৌজন্যে সংগঠনেও হাওয়া লাগে। কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে অনেকেই দল বদলে ভিড় যায় তৃণমূলে। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ডোমকল বিধানসভা কে দেখতে গেলে তৃণমূল ৮৪ হাজার ৮০৮ ভোট পেয়ে শীর্ষে উঠে আসে। দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে যায় কংগ্রেস। সিপিএম একেবারে তিন নম্বরে পৌঁছে। আর বিজেপির ঝুলিতে জোটে ১০ হাজার ২৭১ ভোট।
রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, ডোমকলে কংগ্রেসকে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে ভোট দিয়েছেন এখানে, বিধানসভায় ভোট দিয়েছেন আনিসুরকে। তবে ডোমকল বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর তৃণমূলের অশোক দাস বলছেন, ‘‘আনিসুর রহমানের দলটা উঠে গিয়েছে। মানুষ তাদের ছুড়ে ফেলবে।" তবে তৃণমূল ডোমকল নিয়ে যতই আশাবাদী হোক, তাদের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে চিন্তায় দলের নেতারাই। সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘‘ইতিহাস সাক্ষী, এবারও জয় নিয়ে আমরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।’’ আর কংগ্রেস নেতাদের দাবি, তাদের নির্দিষ্ট ভোট ডোমকলে আছে। সিপিএমের সঙ্গে ভাল বোঝাপড়া হলে তৃণমূল ডোমকল থেকে ধুয়ে মুছে যাবে।