হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হল সিপিএমের। জেলায় যে কটি জায়গায় সিপিএমের সংগঠন মজবুত বলে পরিচিত, হরিণঘাটা তার একটি। ফলে এই পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হওয়া তাদের কাছে ধাক্কা। বাম জমানার শুরু থেকে এই পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের দখলে ছিল।
অন্য দিকে, এ দিনই চাপড়ার চারটি পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে তৃণমূল। চারটির মধ্যে আলফা, বাগবেড়িয়া এবং বৃত্তিহুদা পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে রয়েছে। চাপড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে বিজেপির দখলে। প্রশাসন জানিয়েছে, চারটি পঞ্চায়েতে নিয়ম মেনেই তলবি সভা ডাকা হবে। তিনটি সিপিএম এবং একটি বিজেপি-র দখলে রয়েছে।
কেন এমন ঘটল, সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি সিপিএম নেতৃত্ব। পার্টির জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘কেন এমন ঘটল কিছুই বুঝতে পারছি না। ঘটনাটা আমি জানতামও না। খোঁজখবর নিচ্ছি।’’ জোর করে বা ভয় দেখিয়ে দলত্যাগের অভিযোগ এদিন কেউ জানাননি।
২০১১ সালে পরিবর্তন ঝড়ের দু’বছর পরেও হরিণঘাটায় নিজেদের গড় ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল সিপিএম। সিংহভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিটি ধরে রেখেছিল তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত সিপিএমের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সবক’টি পঞ্চায়েতই হাতছাড়া হয়েছিল সিপিএমের। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও পঞ্চায়েত সমিতি দখল করা তৃণমূলের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গত বছর গঠিত হয়েছে হরিণঘাটা পুরসভা। তার আগে এই পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ছিল ৩০। পুরসভা গঠন হওয়ার পর তা কমে হয় ২৪। এতদিন পর্যন্ত এই পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ছিল ১৩। তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ছিল ১০। কংগ্রেসের এক সদস্য রয়েছে।
মঙ্গলবার শঙ্কর দেবনাথ-সহ সিপিএমের আরও চার সদস্য দুলাল বিশ্বাস, এলিজা খাতুন বিবি, তারাপদ কর্মকার এবং চন্দনা প্রামানিক এদিন তৃণমূলে যোগ দেন।
এদিন বিকেলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরী দত্ত তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। তবে, দলের নেতারা পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছেন তৃণমূলের হরিণঘাটা ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথকে। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে রাজ্যে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। সেই উন্নয়নে সামিল হতেই তৃণমূলে যোগ দিলাম। কেউ আমায় জোর করেনি।’’