অজয়ের শহরে এসে তাঁকেই কটাক্ষে বিঁধলেন ‘বন্ধু’ শঙ্কর

তাঁর রাজপাট গিয়েছে। এখন তাঁরই শহরে এসে টিপ্পনী কেটে যাচ্ছেন একদা সহযোদ্ধারা। ভোটের আগে থেকেই কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন অজয় দে। কংগ্রেস-ত্যাগী অজয়কে বারবার ‘বেইমান’ বলেও দেগে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০০:৪২
Share:

বিজয় সমাবেশে বলছেন আব্দুল মান্নান।— নিজস্ব চিত্র

তাঁর রাজপাট গিয়েছে। এখন তাঁরই শহরে এসে টিপ্পনী কেটে যাচ্ছেন একদা সহযোদ্ধারা।

Advertisement

ভোটের আগে থেকেই কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন অজয় দে। কংগ্রেস-ত্যাগী অজয়কে বারবার ‘বেইমান’ বলেও দেগে দেওয়া হয়েছে।

শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বুধবার জোটের বিজয় সমাবেশেও তার ব্যতিক্রম হল না। বক্তৃতা করতে উঠে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান কারও নাম না করে আক্রমণ করেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী অজয়বাবুকে। কার্যত তাঁকে উদ্দেশ করেই মান্নানের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমাদের লড়াই চলবে। বেইমান সর্বত্রই আছে। বেইমানদের মানুষ যে ভেবে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আগামী দিনেও করবেন, যাতে আর কেউ বেইমানি করার সাহস না পান।’’

Advertisement

অজয় দে-কে যিনি পরাস্ত করেছেন, সেই রাজ্য যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য সভায় উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন স্বেচ্ছা-নির্বাসন থেকে ফিরে এসে রানাঘাট (উত্তর-পশ্চিম) কেন্দ্রে হাত চিহ্নে জয়ী, প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহও। জেলায় সিপিএমের এক মাত্র জয়ী প্রার্থী, রানাঘাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রের বিধায়ক রমা বিশ্বাস যেমন ছিলেন, পাশে ছিলেন দলের রাজ্যসভার সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

একদা রাজনৈতিক সঙ্গী অজয় দে-কে বিঁধতে ছাড়েননি শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘ছ’বারের বিধায়ক, কেন হারলেন? এর জন্য দায়ী তাঁর দম্ভ, তঞ্চকতা। মানুষ নীরববে এত দিন সহ্য করছিলেন। এ বার তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল।’’ তিনি বলতে ভোলেননি, ‘‘এই পরাজিত বিধায়ক আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু। তাঁর দাদাকেও আমি কাছ থেকে চিনতাম।’’

অজয়ের দলত্যাগের পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরে শঙ্কর বলেন, ‘‘এই শহরের কংগ্রেস কার্যালয় দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল। শান্তিপুরের মানুষের জ্বালা আমি বুঝি। অসমঞ্জ দে-র রক্ত দিয়ে তৈরি এই অফিস। বিরোধীদের পতাকা নামিয়ে পার্টি অফিস দখল করে নেওয়া হল। সংসদীয় গণতন্ত্রকে যারা সম্মান করে না গণতন্ত্রও তাদের আঁস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দেয়।’’

নির্বাচনের আগে তৃণমূলের তরফে যে তাঁকে ‘বুড়ো সিংহ’ বলে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছিল, তা ভোলেননি শঙ্কর। তিনি বল‌েন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল বুড়ো সিংহ। শুনে রাখুন, সিংহ বুড়ো হলেও ঘাস খায় না। তার থাবায় নখ না থাকলেও সেই থাবার আঘাত কোন সার্জেনও ঠিক করতে পারে না। দাঁত না থাকলেও সে কিন্তু ঘাস খায় না।’’

অজয় দে-কে আক্রমণ করতে ছাড়েননি ঋতব্রতও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘শান্তিপুর সেই কেন্দ্র যেখানে ঘোড়া বেচাকেনা হয়েছিল। মেরুদণ্ড বন্ধক রাখার ঘটনা ঘটেছিল। এটা ঠিক যে এখনও সব দালাল শাস্তি পায়নি। তবে অধিকাংশ দালাল শাস্তি পেয়েছে। ’’

তাঁরই শহরে এসে যখন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা তাঁকে আক্রমণ করছেন, কী বলছেন অজয় দে? তিনি এ নিয়ে একটি কথাও বলতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘কে কোথায় কী বলল, তার কোনও উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement