প্রতীকী ছবি।
দোষের মধ্যে, আদালতের এক কর্মীর মোটরবাইকের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। সঙ্গে ছিল পুলিশও। সেই সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার কর্মবিরতি পালন করলেন তেহট্ট আদালতের কর্মীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যহত হল কাজকর্ম।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে তেহট্ট আদালতের করণিক, পলাশিপাড়ার রাধানগরের বাসিন্দা মিহির মণ্ডল মোটরবাইকে বাড়ির কাছে জলঙ্গির পাড়ে গিয়েছিলেন। ওই রাস্তায় পুলিশ যানবাহনের নথি যাচাই করছিল।
পুলিশ জানায়, অন্যদের মতো মিহিরের কাছেও কাগজ দেখতে চান কর্তব্যরত সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা। তিনি তা দেখাতে পারেননি। উল্টে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জেনে তেহট্ট থানার ওসি সুজয় মণ্ডল সেখান যান এবং মোটরবাইক-সহ মিহিরকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তার কাগজপত্র দেখে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি তখনকার মতো মিটেও গিয়েছিল। কিন্তু এ দিন আদালতে গিয়ে মিহির সহকর্মীদের কাছে বলেন, পুলিশ তাঁকে হেনস্থা করেছে। এর পরে আদালতের কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করে দেন। পরে এসিজেএম শৈবাল দত্তের ঘরে দু’পক্ষ তাদের বক্তব্য পেশ করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে কর্মবিরতি ওঠে। কর্মীরা ফের কাজে যোগ দেন। স্বাভাবিক হয় আদালতের কাজকর্ম। মিহির অবশ্য পরে বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছিল। তা মিটেও গিয়েছে। আমার কোনও অভিযোগ নেই।’’
আদালতের কর্মী-আইনজীবীদের এ হেন ‘রোষ’ আগেও দেখেছে পুলিশ। মাস তিনেক আগেই হেলমেট ছাড়া লালবাগ আদালত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন এক মহিলা আইনজীবী। ‘সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’ কর্মসূচি চলছিল। লালবাগ আস্তাবল মোড়ে এসডিপিও (লালবাগ) বরুণ বৈদ্যের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ তাঁকে আটকায়। জরিমানা নেওয়ার জন্য রাস্তার পাশেই আস্তাবল মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়।
তাতে ওই মহিলা আইনজীবী ‘অসম্মানিত’ বোধ করেন ও ঘটনাস্থল থেকে ফোন করে সহকর্মীদের ডাকেন। সেই ফোন পেয়ে ১৫-১৬ জন আইনজীবী ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশি পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেন। পুলিশকর্মীরা তাঁদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করে বলেও অভিযোগ ওঠে।
গত ২০ মার্চের ওই ঘটনার পরে ২১ মার্চ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লালবাগ আদালতের আইনজীবীরা। সেই সময়ে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, ওই মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে কোনও ‘দুর্ব্যবহার’ করা হয়নি। ওই সন্ধ্যায় হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক বা স্কুটি চালানোর অভিযোগে বিএসএফের এক জওয়ান, পুলিশের এক হোমগার্ড ছাড়াও বেশ কয়েক জন মহিলার কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। ওই আইনজীবীর আগে যাঁদের ধরা হয়েছিল, তাঁদের জরিমানা করার পরে তাঁকে জরিমানার রসিদ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু আইনজীবী তা শুনতে রাজি হননি। তিনি অপেক্ষা না করে সহকর্মী আইনজীবীদের ডেকে নিয়ে এসে পুলিশ কর্মীদের উপরে চাপসৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। গোটা বিষয়টি মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ডও করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে ‘দুর্ব্যবহার’ দেখা যায়নি।