শূন্যে গুলি ছুড়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন বটে, তবে, কল্যাণী আদালত থেকে তাঁর জামিন মিলতেই এলাকায় ফিরে এসেছে আতঙ্ক।
তিনি প্রীতম রায়, এলাকায় দোর্দন্ডপ্রতাপ কাউন্সিলর অমর-পুত্র।
আয়াদের মারধর করার অভিযোগে, প্রীতম ও তার এক সঙ্গীকে রবিবার রাতেই কল্যাণীর বিবেকানন্দ পল্লি থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সে দিন অমরের অন্য তিন ছেলে, যাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল গুরুতর— এলাকা ছেড়ে গেলেও এ দিন তাদের সাঙ্গো পাঙ্গদের দেখা মিলতে শুরু করেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ভাইয়ের জামিন পাওয়া ওদের বুকে বল বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বার অন্য ভাইয়েরাও এলাকায় ফিরবে।’’
অমর রায়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আয়াদের কাছ থেকে তোলাবাজির অভিযোগ ছিল। অভিযোগ ছিল— অ্যাম্বুল্যান্স-সিন্ডিকেট, হাসপাতালের ওষুধ বিকিকিনি এমনকী চিকিৎসক নিগ্রহেরও।
অমরের দৌরাত্ম্যে রাশ টানতে চলতি মাস থেকে হাসপাতালের ২৮০ জন আয়াকে পুরসভা তাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে আনে। আয়ারা মহকুমাশাসককে জানান, ওই কাউন্সিলরের চাপে তাঁরা রোগীদের থেকে বখশিস আদায় করতে বাধ্য হতেন। তোলা আদায়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমরের ছেলেরা দিন কয়েক ধরে আয়াদের উপরে সরাসরি জুলুম শুরু করেছিল।
হাসপাতালের প্রায় সব আয়াই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর অমর রায়। অভিযোগ, রবিবার রাতে এক প্রাক্তন আয়াকে মারধর করা হয়। তার পরেই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে অমরের বাড়ি চড়াও হয়। সেই সময় তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় অমরের বাড়ি থেকে। মাথা ফাটে এক জনের। ক্ষিপ্ত জনতা অমরের বাড়িতে শুরু করে ভাঙচুর।
এই ঘটনার পরেই পুলিশ প্রীতমকে গ্রেফতার করে। সোমবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় সে। এই ঘটনায় বিস্মিত পুলিশ আধিকারিকরাও। কারণ, তাকে জামিন অযোগ্য ধারা দেওয়া হয়েছিল। অমরের বাকি তিন ছেলে এখনও পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। কিন্তু, প্রীতম জামিন পেয়ে যাওয়ায় আদালতে আত্মপমর্পন করলে সহজেই জামিন পেয়ে যাবে।