সামাজিক দূরত্ব রাখতে
Coronavirus

কাজ করো দোঁহে মিলে

এই পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য  ‘ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে’ জোর দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি

লকডাউনের প্রভাব পড়েছে একশো দিনের কাজেও। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে একই জায়গায় একাধিক শ্রমিক নিয়ে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আপাতত তাই রাশ টানা হচ্ছে। শুধু 'ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে' যেখানে এক বা দু’জনে কাজ করেন, তেমন কাজে ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার জেরে গত তিন সপ্তাহে জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ হয়নি বললেই চলে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই সময়ে আরও প্রায় ১৪ লক্ষ শ্রম দিবসের কাজ হত। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২৮.৫ কোটি টাকা। যা বহু অভাবী মানুষের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

হরিহরপাড়ার বাসিন্দা মিনারুল শেখ তাঁদেরই এক জন। তিনি বলেন, ‘‘মাঠে চাষের কাজ নেই বললেই চলে। একশো দিনের কাজও বন্ধ। ফলে আগামী দিনে সংসার টানব কী করে, তা নিয়ে ভেবে কুল পাচ্ছি না।’’এই পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য ‘ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে’ জোর দিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ১ এপ্রিল একশো দিনের কাজের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত, মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপ্ত পোড়েল জেলার মহকুমাশাসকদের পাশাপাশি বিডিওদেরও চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত আর্থিক বছরে মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় এক কোটি ৬১ লক্ষ শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। কাজ দেওয়া হয়েছে ২ লক্ষ ৭০ হাজার পরিবারকে। গড়ে ৫৭ দিন করে কাজ পেয়েছে তারা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশ জুড়ে মার্চ মাস থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। ফলে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে একাধিক শ্রমিককে নিয়ে কাজ করা বন্ধ। শুধু ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে, উপভোক্তা বা তাঁর স্ত্রী দু’জন মিলে কাজ করতে পারেন। তাই লকডাউনের সময়ে জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ হয়নি বললেই চলে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘লকডাউনের সময়ে গোটা জেলায় ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে মাত্র চার হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। জেলার জনসংখ্যার নিরিখে এটা প্রায় কিছুই নয়।’’বিকল্প হিসেবে ‘ব্যক্তি উপভোক্তা প্রকল্পে’র উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। যে প্রকল্পে প্রায় ৫৫০ বর্গফুট জমিতে এক-দু’জন শ্রমিক বা স্বামী- স্ত্রী মিলে পুকুর কাটতে পারেন। যে জন্য একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ২০ হাজার ৪০০ টাকা বরাদ্দ করা হবে। নিজের জমিতে ফলের বাগান করে দেখাশোনা করলে ৬২টি শ্রম দিবসের মজুরি দেওয়া হবে। যার আর্থিকমূল্য ১২,৬৪৮ টাকা, সোপপিট করলে ১২টি শ্রমদিবসের মজুরি, বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে যাঁরা বাড়ি পেয়েছেন তাঁরা বৃষ্টির জল ধরার জন্য গর্ত খুঁড়লে ১০টি শ্রমদিবসের মজুরি পাবেন, জৈব সারের জন্য পিট তৈরি করলে ১২টি শ্রমদিবসের মজুরি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement