প্রতীকী ছবি।
অফিসযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে দিনের ব্যস্ত সময়ে শহর কলকাতা ও তার আশপাশে ভিড় এড়াতে একশো শতাংশ লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ব্রাত্যই থাকল শিয়ালদহ লালগোলা শাখা। দিনান্তে একটি মাত্র ট্রেন লালগোলা থেকে শিয়ালদহ যাতায়াত করছে। হতাশ যাত্রীরা। তবে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হরিনারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কৃষ্ণনগরের পর থেকে লালগোলা পর্যন্ত রেলের হিসেবে শহরতলির আওতায় পড়ে না। তবু এই শাখা শিয়ালদহের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাই যাত্রী সুবিধার কথা মাথায় রেখে রেল নতুন করে কিছু পরিকল্পনার কথা ভাবছে।”
প্রায় আট মাসের মাথায় চলতি সপ্তাহের বুধবার থেকে বিধি মেনে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে পূর্ব রেলের এই শাখায়। শুরুর প্রথম তিন দিনে রেলের এই শাখায় পাঁচ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু দু’দিন রেল চালানোর পরে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখায় ব্যস্ত সময়ে ৯৫ শতাংশ তেমন প্রয়োজনে একশো শতাংশ ট্রেন চালানোয় শিলমোহর পড়েছে। অথচ পূর্ব রেলের এই শাখায় নতুন কোনও ট্রেন চালানোর কথা শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শোনাতে পারেনননি রেল কর্তারা। যদিও সচল রেলে অচল বিধি অব্যহত রেলযাত্রার তৃতীয় দিনেও।
নিত্যযাত্রী অম্লান দত্ত ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে সরকারের এই উদাসীনতা নতুন নয়।” করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণায় মার্চের শেষ সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। সেই সময় তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেন সহ আপ ডাউন মিলিয়ে ১৬ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করত এই শাখায়। কিন্তু নিউ নর্মাল ট্রেন সফরে এখনও গড়ায়নি এক্সপ্রেস ট্রেনের চাকা। এক রেলযাত্রী অনন্ত সাহা বলেন, “এক্সপ্রেস ট্রেন চালালে সেখানে সংরক্ষিত কামরা থাকায় দূরত্ব বিধি মানা সহজ হত যা লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না।” তেমনই শিয়ালদহ থেকে ফিরতি পথে ট্রেনের সংখ্যা কম ও বিকেল পাঁচটার পর ট্রেন না থাকায় নিউ নর্মালে রেল সফর হয়ে উঠছে ভোগান্তির। বহরমপুর রেলওয়ে প্রোগ্রেসিভ যাত্রী সেবা সমিতির নেত্রী সোনালী গুপ্ত বলেন, “আমরা সুস্থ সময়েও দেখেছি এই শাখায় ট্রেন চালানোয় বরাবর রেলের অনীহা। অথচ এই শাখায় রেলযাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। আরও বেশি ট্রেন চালানোর দাবি নিয়ে রেলের কাছে লিখিত আবেদন করব।” এই শাখায় ভিড় যে ভাল হয়েছে তা রেলের টিকিট বিক্রির হিসাবেও স্পষ্ট। গত দু’দিনে এই শাখায় মোট প্রায় ২৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা যায়।
রেলসূত্রে জানা যায়, রেলের হিসেবে শিয়ালদহ থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত শহরতলি। কৃষ্ণনগরের পর থেকে লালগোলা পর্যন্ত শহরতলি নয়। তাতেই আটকাচ্ছে।
ট্রেনে হকার ওঠায় নিষেধ থাকলেও বেশ কিছু হকারকে এদিন ট্রেনে দেখা গিয়েছে। টিকিট কেটে যাত্রী হিসাবেই ট্রেনে উঠেছেন বলে দাবি ওঁদের। প্ল্যাটফর্মে ঢিলেঢালা নজরদারির বিষয়ে প্রশ্ন ওঠায় রেলের ওই আধিকারিক বলেন, “যথেষ্ট সংখ্যায় রেল পুলিশ আছে।’’