প্রতীকী ছবি।
তাঁর জ্বর এসেছিল। কাশিও ছিল। লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছিল। তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে গলায় দড়ির ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল এক বৃদ্ধের দেহ।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কুমারেশ ঘোষ (৬২)। বাড়ি কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালি এলাকায়। দুপুর ১২টা নাগাদ তাঁকে বাড়ির পাশের বাগানে আমগাছের ডাল থেকে ঝুলতে দেখা যায়। পরিবারের কেউ কেউ মনে করছেন, লালারস পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়তে পারে এই ভয়েই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, দিন সতেরো আগে কল্যাণীর একটি নার্সিংহোমে কুমারেশবাবুর হার্নিয়া অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি কল্যাণীতেই ছেলের বাড়িতে দিন সাতেক ছিলেন। তার পরে বাড়ি ফিরে আসেন। সব ঠিকঠাকই চলছিল। রবিবার তাঁর সামান্য জ্বর আসে। স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে জ্বরের ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়, জ্বর সেরেও যায়। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে প্রবল কাশি শুরু হয়।
কুমারেশবাবুর জামাই অমিত ঘোষ বলেন, “প্রথমত কাশি, তার উপরে কল্যাণী থেকে অস্ত্রোপচার করিয়ে এসেছেন। আমরা তাই ঝুঁকি নিতে চাইনি। করোনা পরীক্ষা করে নিতে চেয়েছিলাম। সেই কারণে বুধবারই আমরা কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে লালারস পরীক্ষার জন্য ওঁর নাম নথিভুক্ত করে রাখি।”
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার পরীক্ষার জন্য শ্বশুরকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন বলে তাঁরা গাড়ি খুঁজছিলেন। কোনও গাড়ি না পেয়ে কথা বলতে যান স্থানীয় আশাকর্মীর বাড়িতে। অমিত বলেন, “তার মধ্যেই তিনি এই কান্ড ঘটিয়ে ফেললেন!”
করোনা নিয়ে আতঙ্কের জেরে আত্মঘাতী হওয়ার অভিযোগ আগেও পাওয়া গিয়েছে জেলায়। তবে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমত, লালারসের নমুনা নেওয়ার সময়ে কোনও জ্বালাযন্ত্রণা হয় না। দ্বিতীয়ত, এই ভাইরাস যতটা আতঙ্ক নিয়ে এসেছিল ততটা কিন্তু এ দেশে প্রকাশ পায়নি। শতাংশের হিসাবে খুবই সামান্য সংখ্যক মানুষ গুরুতর ভাবে সংক্রমিত হচ্ছেন। বাকিদের চিকিৎসারই প্রয়োজন হচ্ছে না। বাড়িতে থেকে সেরে উঠছেন। ফলে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তবে সংক্রমণ এড়াতে সতর্ক থাকাটা জরুরি।”