প্রতীকী ছবি।
জেলায় গত কয়েক দিন ধরেই করোনা সংক্রমণের হার কমেছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের দাবি, রাজ্যে গত কয়েক দিন ধরে যে কড়া বিধিনিষেধ জারি হয়েছে, তাতে রাস্তাঘাটে লোকজন বেরোচ্ছেন না। মানুষও সচেতন হয়েছেন করোনা বিধি মানার ব্যাপারে। তাঁদের দাবি, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙা গেলেই হার কমবে। যদিও বাস্তব ছবি অন্য কথাই বলছে।
অভিযোগ, বিধিনিষেধ জারি হওয়ার পর প্রথম কয়েক দিন প্রশাসনকেও শক্ত হাতে রাস্তায় নেমে বিধিনিষেধ কার্যকর করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই আলগা হয়েছে ‘বাঁধন’। নিয়মানুযায়ী, সকাল সাতটা থেকে ১০টা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান খুলে রাখার কথা। কিন্তু অভিযোগ, গত দু’তিন দিন ধরে বহরমপুর, লালবাগ, ডোমকল, জঙ্গিপুর-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের পরেও দুপুর পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে দেখা যাচ্ছে। অনেকে আবার দোকানের শাটার কিছুটা নামিয়ে বিক্রিবাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ, গোড়ায় পুলিশ এলাকায় ঘুরে ঘুরে অনিয়ম দেখলে জোর করে দোকান বন্ধ করে দিচ্ছিল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে পুলিশের ঔদাসীন্য বাড়ছে। পাশাপাশি, বিধিনিষেধ চালু হওয়ার পর মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোলে বা অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরি করলে পুলিশ তাদের আটক করছিল। অভিযোগ, গত তিন- চার দিন ধরে পুলিশের সেই তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তবে এর মধ্যেও কিছু এলাকায় ভয়ে হোক কিংবা সচেতনতায় বেশইর ভাগ পথচারীই রাস্তায় বেরোলে মুখে মাস্ক রাখছেন। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় বিধি ভাঙার রেওয়াজই বেশি নজরে পড়েছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশ নিয়মিত এলাকায় টহল দিলে এই প্রবণতা কিছুটা হলেও রোধ করা যাবে। গত সাতদিনে বহরমপুর থানার পশ্চিমগামিনী এলাকায় একদিনও পুলিশ যায়নি বলে দাবি রাধারঘাট ২ নম্বর পঞ্চায়েতের রানিনগর গ্রামের বাসিন্দাদের। জুলফিকার আলি নামে এক বাসিন্দা বলেন, “গ্রামীণ এলাকায় করোনা নিয়ে সচেতনতাই নেই।’’
এদিকে, সোমবার থেকেই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে। বহরমপুর পুলিশ হাসপাতালে মঙ্গলবার সেই প্রতিষেধক নেওয়ার লাইনে ছিল না দূরত্ববিধি মানার বালাই। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “বারবার অনুরোধ করার পরেও একদল মানুষ কিছু শুনছেন না। করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বনের কথা আমরা বারবার প্রচার করছি। আমাদের কর্মীরা রাস্তায় নেমে কারও মুখে মাস্ক না থাকলে তাঁদের মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন। তারপরও একদল মানুষ নিয়ম ভাঙছেন।’’ পুলিশের দাবি, প্রতিদিন জেলায় প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হচ্ছে বিধি না মানার অভিযোগে।