প্রতীকী ছবি।
কী ভাবে আক্রান্ত হলেন তিনি, সেই কারণই এখন হাতড়াচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
বৃহস্পতিবার ভীমপুরের গাঁটরা এলাকার এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের সন্ধান মেলে। বছর ছত্রিশের ওই ব্যক্তি পেশায় রাজমিস্ত্রি। তবে তিনি ভিন রাজ্যে কাজ করতেন না। সম্প্রতি কোনও করোনা-রোগীর সংস্পর্শেও আসেননি। তা হলে কি নদিয়ায় কোনওভাবে শুরু হয়ে গেছে গোষ্ঠী সংক্রমণ? এই প্রশ্নটাই এখন সব চাইতে বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে জেলার কর্তাদের সামনে।
তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। ৫ মে তিনি কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অস্ত্রোপচারের জন্য। সেখানেই করোনার রুটিন পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তান, মা ও ৮০ বছরের বৃদ্ধা ঠাকুমা-সহ কয়েক জন আত্মীয় ও প্রতিবেশীকে কৃষ্ণনগরে কোয়রান্টিন সেন্টারে ভর্তি করে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা মোট ১৫ জনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে এবং রাতেই তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “কী ভাবে ওই ব্যক্তি সংক্রমিত হলেন তা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রোগের উৎস এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টি ভাবাচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি গত প্রায় এক মাস গ্রামের বাইরে বের হননি, বাইরে থেকে ফেরা তেমন কারও সংস্পর্শেও আসেননি। বারো-তেরো দিন আগে তিনি গ্রামের ভিতরেই এক ব্যক্তির বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করেছিলেন। তার পর থেকে আর বাড়ির বাইরেও বের হননি। তাঁর শরীরে আলাদা করে করোনাভাইরাসের কোনও উপসর্গও যেমন, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ছিল না।
তবে কলকাতার যে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি কিডনির অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন সেই হাসপাতালে দিন পনেরো আগে এক রোগী ও রোগীদের খাবার পরিবেশন করতেন এমন এক কর্মীর করোনা ধরা পড়ে। ফলে কেউ-কেউ মনে করছেন, ওই হাসপাতাল থেকেই তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করেছে। যদিও তাতেও একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তবে দিন পনেরো আগের ঘটনা থেকে তাঁর সংক্রমিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে অন্য একাংশের মত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ওই ব্যক্তির দাদা সিআইএসএফে চাকরি করেন। থাকেন দমদমে। তিনি ভাইকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। জানা যাচ্ছে, ওই দাদার দুই সহকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কোনও ভাবে সেই সূত্রে গাঁটরার ওই ব্যক্তি সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন।