প্রতীকী ছবি
জেলা সদর, মহকুমা ও স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড ফের চালু করল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু নদিয়ার একমাত্র কোভিড ১৯ হাসপাতালটি কার্যত চালু হল না।
এসএনআর কার্নিভালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করা নিয়ে বৃহস্পতিবারও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। কিন্তু তা কার্যত ফলপ্রসূ হল না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে দু’পক্ষের টানাপড়েনের জেরে ঠিক কবে থেকে চিকিৎসা শুরু হবে, তা-ও নিশ্চিত করা গেল না বলেই দাবি জেলার কর্তাদের। তবে কোনও পক্ষই এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি।
নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কোয়রান্টিন ও আইসোলেশন সেন্টার এবং সারি হাসপাতাল চালাতে এমনিতেই প্রচুর সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লাগছে। সেই চাহিদা পূরণ করে কল্যাণীর কোভিড ১৯ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না। সেই চাহিদা পূরণ করতে জেএনএম-এর কাছে আবেদন করেছিলেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু জেএনএম তাতে রাজি হয়নি।
এর মধ্যে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক, ব্লক প্রাথমিক, গ্রামীণ, মহকুমা ও জেলা হাসপাতাল থেকে জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার ও নার্স, কর্মীদের তুলে এনে ৩২ দিনের ‘ডিউটি রোস্টার’ করে কার্নিভালে কোভিড হাসপাতাল নাম-কা-ওয়াস্তে ‘চালু’ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে তা আদৌ কতটা কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। জেলার এক কর্তার কথায়, “জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে হাসপাতাল চালু রাখলেও তাঁরা তো ভেন্টিলেটর চালু করতে পারবেন না।” তবে বৈঠকের পরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কল্যাণী জেএনএমের অধ্যক্ষ কেশব মুখোপাধ্যায় কিছু বলতে চাননি। বৈঠকে উপস্থিত জেএনএম সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং কল্যাণীর মহকুমাশাসক ধীমান বারুইও মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
আগে এক বার খুলে বন্ধ করে দিলেও এ দিন ফের জেলার সাধারণ হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। অপ্রতুল চিকিৎসক ও পিপিই কম খরচ হওয়ার যুক্তি দিয়ে এর আগে এগুলি বন্ধ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়েছিল যে এর ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমবে। সন্দেহজনক বা শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিদের ‘সারি’ হাসপাতাল হিসেবে তৈরি গ্লোকাল হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। এঁদের কেউ করোনা আক্রান্ত বলে জানা গেলে কার্নিভালের কোভিড ১৯ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
কিন্তু অন্য সমস্যা তৈরি হয়। ১০২ অ্যাম্বুল্যান্সের চালকেরা ইস্তফা দিতে শুরু করেন। ফলে জেলায় শুধু মাত্র করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহভাজনদের বহন করার জন্য ১২টি অ্যাম্বুল্যান্স চালু করা গেলেও কলকাতা থেকে নিয়ে আসতে হয় সাত জন চালককে। তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় জেলার নানা প্রান্ত থেকে সন্দেহভাজন লোকজনকে গ্লোকালে নিয়ে আসতে সমস্যা হতে থাকে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, “এখন ঠিক হয়েছে, জ্বর সর্দি কাশির রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসা করা হবে। যাঁদের ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হবে, কেবল তাঁদের সারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হবে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।