প্রতীকী ছবি।
করোনা হাসপাতালে রোগীদের মৃত্যু নিয়ে গত কয়েক দিন দরে হইচই চলছে। কখনও রোগী মৃত্যুতে গাফিলতি বা পরিকাঠামোর অভিযোগ উঠেছে, কখনও বা সারি ওয়ার্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি থাকা ১০ জনের একই দিনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নড়েচড়ে বসেছে। আরও ভাল চিকিৎসা পরিষেবা দিতে করোনা হাসপাতাল থেকে সারি ওয়ার্ড সরানো, অক্সিজেন দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড অ্যাটেন্ডেন্ট নিযুক্ত করা, কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাবের কয়েকজন সদস্যকে করোনা হাসপাতালে রোগীদের সেবার কাজে নিযু্ক্ত করা, অক্সিজেন সরবরাহের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পাইপলাইনের ব্যবস্থার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়ে এমন করা হচ্ছে? মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিনই করোনা হাসপাতালে নজরদারি চালাচ্ছি। কোনও ফাঁক-ফোকর থাকলে সেগুলি বন্ধ করে ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তারই অঙ্গ হিসেবে সারি ওয়ার্ড মেডিক্যালে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অক্সিজেন দিতে সহায়তা করার জন্য ৪জন ওয়ার্ড অ্যাটেন্ডেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হওয়া পাঁচজন আজ সোমবার থেকে মাতৃসদনে কাজ শুরু করবেন।’’
গত দু’সপ্তাহে এক স্বাস্থ্যকর্মী এবং জেলা পরিষদের বন ও ভূমি দফতরের কর্মাধ্যক্ষের মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে মৃত্যু হয়। এ ছাড়া সারি ওয়ার্ডে একই দিনে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি থাকা ১০ জনের মৃত্যু হয়। যার জেরে প্রশাসনিক মহলে হইচই শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে সারি ওয়ার্ড সরানো থেকে ওয়ার্ড অ্যাটেন্ডেন্ট কিংবা কোভিড ওয়ারির ক্লাবের সদস্যদের করোনা রোগীর সেবায় নিয়োগের সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মাতৃসদন থেকে সারি ওয়ার্ড মেডিক্যালে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’
ফলে শুধুমাত্র করোনা পজ়িটিভ রোগীদের মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। করোনার উপসর্গ নিয়ে যাঁরা আসবেন তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হবে। তাঁদের মধ্যে থেকে কেউ পজ়িটিভ হলে তাঁকে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। এছাড়া মাতৃসদন হাসপাতালে কেন্দ্রীয় ভাবে পাইপ লাইনের সাহায্যে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। ফলে বড় বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার সরিয়ে নিয়ে গিয়ে রোগীকে দিতে গিয়ে অনেক সময় স্বাস্থ্য কর্মীরা সমস্যায় পড়েন। এই পরিস্থিতি আপাতত ১৫ জন রোগীকে কেন্দ্রীয় পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করার কাজ চলছে।
শনিবার রাতে জেলায় ৬১জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। আক্রান্তদের তালিকায় বিএসএফ কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মী, আশাকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।