ফাইল চিত্র
দিনদশেক আগে দেওর ওড়িশা থেকে গাংনাপুরের বাড়িতে ফিরেছিলেন। করোনা আবহে অন্য রাজ্য থেকে আসা দেওয়ের উপস্থিতিতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাই আট মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে চাকদহে বলরামপুরে বাপের বাড়িতে চলে এসেছিলেন মহিলা।
কিন্তু তা জানাজানি হতে এলাকার লোকজন ভয়ে মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি তুলে এ দিন রাস্তা অবরোধ করেন। শেষমেশ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ওই মহিলা, তাঁর আট মাসের শিশু এবং ওই মহিলার মাকে ১৪ দিনের জন্য চাকদহের কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
এ দিন সকাল থেকেই ওই মহিলার এলাকায় আসা নিয়ে এবং তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, রাস্তা অবরোধ করেন এলাকার মানুষ। করোনা সংক্রমণের জেরে রাজ্যে একাধিক মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে আসা কর্মীর পরিবারের লোক এলাকায় ঢোকায় ক্ষেপে ওঠে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার সকালে চাকদহ থানার বলরামপুরে রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করেন তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ, চাকদহ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় হালদার এবং স্থানীয় পুলিশ বাহিনী। তাঁরা ওই মহিলার বাপের বাড়িতে যান, পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। শেষে ওই মহিলা, তাঁর মেয়ে এবং মাকে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। চাকদহ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় হালদার বলেন, “এলাকার মানুষ ভয় পাচ্ছিল। সেই কারণে তাঁদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার শ্বশুরবাড়ি গাংনাপুরের ডুবলিতে। কাজের সুবাদে তাঁর দেওর ওড়িশায় থাকেন। দশ দিন আগে ওই ব্যক্তি নিজের বাড়িতে ফিরেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আবহে লকডাউন অমান্য করেই সোমবার বিকালে ওই মহিলা চাকদহ থানার শিলিন্দা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর আদিবাসিপাড়ায় তাঁর বাপের বাড়ি চলে আসেন। এই খবর এলাকায় জানাজানি হতেই ভয় ছড়িয়ে যায় গোটা এলাকায়। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর দাবিতে এ দিন সকাল এগারোটা থেকে শ্রীনাথপুর-শ্রীরামপুর রাজ্য সড়কের বলরামপুরে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় ধরে এই অবরোধ চলে। ওই মহিলা বলেন, “আমার দেওরের কিছু হয়নি। তিনি এই রাজ্যে আসার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। গ্রামের মানুষ অযথা ভয় পাচ্ছেন।”