এখনও নেই সচেতনতা। ওষুধের দোকানে ভিড়, নেই এক জন থেকে আরেক জনের নির্দিষ্ট দূরত্বও। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
একুশ দিনের লকডাউনের মধ্যে এখনও সাত দিনই কাটেনি। তার মধ্যেই মুদিখানায় জিনিসের জোগান কমতে শুরু করেছে। তেমনই কোথাও কোথাও জিনিসের দামের অনেকটাই হেরফের চোখে পড়ছে। বিশেষ করে মুড়ি, চাল, ডাল, তেল, চিনি বা সোয়াবিনের মতন অবশ্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ঘিরেই তৈরি হয়েছে টানাপোড়েন।
কেজি প্রতি পাইকারি দরও খানিকটা বেড়েছে কিছু পণ্যের। যেমন, মুড়ি ছিল ৪০-৪৫ টাকা। হয়েছে ৫০ টাকা। চাল ছিল ৩৮ টাকা, হয়েছে ৪১-৪২ টাকা। চিনি ছিল ৩৭ টাকা, হয়েছে ৩৮-৪০। মুসুর ডাল ছিল ৯০-৯৫ টাকা, হয়েছে ১১০ টাকা। মুগডাল ১০০-১০৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২০। সয়াবিন ৯৮ ছিল, হয়েছে ১০০ টাকা।
যদিও জেলার বিভিন্ন শহরের ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারা জানিয়েছেন, যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী মজুত আছে। সুতরাং অকারণে বাড়িতে বেশি জিনিস মজুত করার দরকার নেই। কৃত্রিম অভাব তৈরি করে জিনিসের দাম বাড়িয়ে তোলার চেষ্টাও কাম্য নয়। বর্ধমান সংলগ্ন নদিয়ায় চাল, চিঁড়ে বা মুড়ি মূলত বর্ধমান জেলা থেকে আসে। গণপরিবহনের অপ্রতুলতার কারণে ওই সব পণ্য স্বাভাবিক ভাবে পৌঁছতে পারছে না। শান্তিপুর বা কৃষ্ণনগরের চাল ও মুড়ি বড় মূলত সরবরাহ হয় কালনা থেকে নদীপথে। আবার নবদ্বীপ-সংলগ্ন শ্রীরামপুর থেকেও সড়ক পথে নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগরের বাজারে পৌঁছয় মুড়ি এবং চাল। শান্তিপুর কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক তারক দাস বলেন, “ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, শান্তিপুরের পুরপ্রধান এবং কালনার পুরপ্রধানের সম্মিলিত চেষ্টায় কালনা ঘাট দিয়ে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।’’
তবে মুড়ির ক্ষেত্রে জেলাজুড়ে কমবেশি আকাল রয়েছে। নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “মুড়ি তৈরি হয় এক বিশেষ ধরনের চাল দিয়ে। খাওয়ার চাল নিয়ে মানুষ এখন এত ব্যস্ত যে মুড়ির চালের প্রতি সপ্তাহ খানেক ধরে কেউ নজর দেননি। পাশাপাশি শ্রীরামপুর এবং বাবলারি অঞ্চল জুড়ে প্রচুর পরিমাণে মুড়ি চিঁড়ের কল থাকলেও শ্রমিকেরা আসতে না পারায় সমস্যা হচ্ছে।”
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নদিয়ার জেলায় প্যাকেট করা তেল এবং সোয়াবিন সরবরাহ হয় হলদিয়া থেকে। সেই সঙ্গে স্থানীয় ঘানির তেলেরও একটা বড় বিক্রি আছে। হলদিয়া থেকে আসা তেল না সোয়াবিন কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, শান্তিপুর, নবদ্বীপের মতন শহরে সরাসরি পৌঁছয়। গোটা জেলায় যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ আছে তাতে আগামী তিন সপ্তাহে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।