হোটেলের দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র
বড়জোড় দশ ফুট বাই পনেরো ফুটের ঘর। তার এক কোণে রান্না করা খাবার, বাসনপত্র রাখা রয়েছে। মাঝে টানা তিনটি টেবিল ও তার দু’দিকে গোটা দশেক চেয়ার সাজানো। একটি চেয়ারও ফাঁকা নেই। দূরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা করাতে আসা লোকজন সেখানে খাওয়া দাওয়া সারছেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে আনলক পর্বে যখন সামাজিক দূরত্ব বজায়ে জোর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তখন, খাস মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের ছোট ছোট হোটেলগুলিতে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
শুধু মেডিক্যাল কলেজ চত্বর নয়, বহরমপুরে মোহনা বাস টার্মিনাস চত্বরে পথের পাশের হোটেলগুলিতেও দূরত্ববিধি এক প্রকার শিকেয় উঠেছে। কাজ শেষে বাসে ওঠার আগে খাওয়ার জন্য হোটেলগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন।
হোটেলে দূরত্ববিধি বজায় রাখতে একটি টেবিল ফাঁকা রেখে পরের টেবিলে লোকজনকে বসানোর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু পথের পাশের হোটেলগুলিতে সে সব মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পুলিশের নরজরদারি নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যদিও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘পুলিশ মাঝে মধ্যে বাজারগুলির পাশাপাশি হোটেলগুলিতে অভিযান চালায়। যাঁরা বিধি মানেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হোটেলগুলিতে সচেতনতা আরও বাড়ানো হবে।’’
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে পথের ধারের ছোট হোটেলের মালিক বুলবুলি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি বলে তো বসে থাকলে চলবে না। হোটেল চালিয়ে সংসার চলে। লোকজন এলে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘হোটেলের কর্মীরা সুরক্ষাবিধি মেনে খাবার দিচ্ছে।’’ হরিহরপাড়া থেকে চিকিৎসা করাতে এসে মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া পথের পাশের হোটেলে খেতে ঢুকেছিলেন ইকবাল হোসেন। তিনি জানালেন, ‘‘দূরত্ববিধি মানতে গেলে খাবার পাব কোথায়?’’
বহরমপুর বাস টার্মিনাসের কাছে একটি পথের পাশের হোটেলের মালিক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্বাভাবিকের তুলনায় এখন ৬০ শতাংশ খরিদ্দার কম। দূরত্ববিধি যতটা সম্ভব মানছি। একই টেবিলে চার জন বসত। এখন দু’জন বসছেন।’’ ডোমকলের জুলিয়াস মণ্ডল বললেন, ‘‘না খেয়ে তো থাকা যাবে না। তাই ভিড় হলেও হোটেলে খেতে হচ্ছে।’’