corona virus

আসল নাকি নকল রোগী, ধন্দে সবাই

যত সময় এগোচ্ছে ততই ‘নাম বিভ্রাটের’ আশঙ্কা চেপে বসছে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে। 

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

প্রতীকী চিত্র।

প্রায় গোয়েন্দা কাহিনির মতো মোড় নিয়েছে পালিয়ে গিয়ে ধরা পড়া করোনা-আক্রান্তের ঘটনা! এ আক্রান্ত কি সেই আক্রান্ত নাকি অন্য কেউ, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।

Advertisement

গত বুধবার নাকাশিপাড়া থানার পুলিশের সঙ্গে কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক মণীশ বর্মা নিজে গিয়ে বেথুয়াডহরি এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে যাঁকে ধরেছেন তাঁর আদৌ করোনা রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে। যত সময় এগোচ্ছে ততই ‘নাম বিভ্রাটের’ আশঙ্কা চেপে বসছে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে।

ক্রমশই তাঁদের মনে হচ্ছে, একই নামের অন্য এক জনকে ধরে ‘ভুল করে’ হয়তো কৃষ্ণনগরের সারি হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে আসানসোল-ঝাড়খণ্ড সীমানা থেকে এক ব্যক্তিকে ধরা হয়। জানা যায়, তাঁর বাড়ি নদিয়ার তেহট্টের কুষ্টিয়া গ্রামে। তিনি ওষুধের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তখনই কিছু শারীরিক উপসর্গ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে আসানসোলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ৭ মে তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয় পরীক্ষার জন্য। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই ৯ মে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তিনি করোনা পজেটিভ। হইচই পড়ে যায়। রাতের ঘুম উড়ে যায় স্বাস্থ্যকর্তাদের। শুরু হয় খোঁজ। তেহট্ট থানার পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে জানতে পারে, ওই ব্যক্তি পরিবারে নিয়ে কৃষ্ণনগরে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন এবং তিনি পলাশিতে ওষুধ বিক্রি করতে গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ধরে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। কিন্তু জেরায় তিনি প্রথম থেকে আসানসোলের নার্সিংহোম থেকে পালিয়ে আসার বিষয়টি অস্বীকার করেন। দাবি করেন, ৭ থেকে ১৩ মে তিনি কৃষ্ণনগরেই ছিলেন। একই দাবি করেন তাঁর স্ত্রী ও বাড়ির মালিক। তাঁরা জানান, কৃষ্ণনগরের কাছে দোগাছি এলাকায় একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধের কারখানায় ওই ব্যক্তি কাজ করেন। বুধবার পলাশিতে গিয়েছিলেন ওষুধ দিতে। করোনা-আক্রান্ত হওয়া অবস্থায় কারও পক্ষে দূরে ওষুধ বিক্রি করাটা অস্বাভাবিক, সেই বিষয়টাও অনেকে তুলেছেন।

তা হলে প্রশ্ন ওঠে, আসানসোলের নার্সিংহোম থেকে যিনি পালিয়েছেন সেই করোনা-আক্রান্ত কোথায় গেলেন? তাঁকে চিহ্নিত করতে না-পারলে বিপদ। তিনি বহাল তবিয়েতে ঘুরতে থাকলে রোগ ক্রমশ ছড়াবে। কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক মণীশ বর্মা বলেন, “ওই ব্যক্তির লালারসের রিপোর্টে কী আসে সেটা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” শেষ পর্যন্ত যদি দেখা যায় যে, ওই ব্যক্তি আর আসানসোলের আইসোলেশন থেকে পালানো ব্যক্তি এক নন? এর কোনও উত্তর মেলেনি। তবে ওই ব্যক্তির ধরা পড়ার খবরে ইতিমধ্যে কৃষ্ণনগরের তাঁর বাড়ির এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানপাট বন্ধ। পুলিশ গিয়ে বাড়ির সকলকেই ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে এসেছে। আতঙ্ক ছড়িছে ওই ব্যক্তির দেশের বাড়ি কুষ্টিয়াতেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement