শান্তিপুর কলেজের ছাদে স্নাতক স্তরের পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনায় দায় কার, তা নিয়ে চাপানউতোর চলছেই।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সেখানে যে এত পরীক্ষার্থীর জায়গা হবে না তা আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহের নিয়ামক আবার পাল্টা বলছেন, তাঁদের এই সমস্যার কথা জানানো হয়নি।
আগামী সোমবার ওই কলেজে আবশ্যিক পরিবেশবিদ্যার পরীক্ষা আছে। এক ঘন্টার হবে সেই পরীক্ষা নিয়ে যাতে ফের বিতর্ক তৈরি না হয়, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে কলেজ সূত্রের খবর। কলেজের দোতলার ছাদে ছাউনি দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
শুক্রবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজের প্রথম বর্ষের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। রানাঘাট কলেজের পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছিল শান্তিপুর কলেজে। বেশ কিছু পরীক্ষার্থীকে কলেজের দোতলার খোলা ছাদে ভাড়া করা চেয়ার-টেবিলে পরীক্ষা দিতে বসানো হয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ইংরেজি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন ২৩০০-র বেশি পরীক্ষার্থী। এত ছাত্রছাত্রীকে বসানোর মত যথেষ্ট জায়গা নেই কলেজে। ওয়েবকুটার জেলা সম্পাদক বিমান সমাদ্দার বলেন, “কোনও কলেজে পরীক্ষার আসন দেওয়ার আগে সেখানে কত জনের বসার ব্যবস্থা আছে, তা দেখে নেওয়া উচিত। না হলে এই ধরনের সমস্যা হবেই।”
শান্তিপুর কলেজের অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য এ দিনও দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আগেই এই সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “আগেই ইমেল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। চেয়ার-টেবিল যে ভাড়া করা হয়েছে, সে কথাও জানানো হয়েছিল। তাদের সম্মতি পাওয়ার পরেই যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ভাড়া বাবদ কত খরচ হবে, তা-ও জানানো হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা গিয়েছে, কোনও কলেজে সমস্ত পরীক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা না থাকলে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থীদের বসানোর ব্যবস্থা করা হয়। শান্তিপুর কলেজের ক্ষেত্রে এ রকম কোনও ব্যবস্থা কেন করা হল না? কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহের নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাস বলছেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের এটা জানাননি যে তাদের কলেজে এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে বসানোর মতো জায়গা নেই।”
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক শান্তনু সিংহের কটাক্ষ, “একটা চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে এই রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি সৌরিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন এমন হল, তা কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবেন।” কলেজের প্রশাসক, রানাঘাটের মহকুমাশাসক মনীশ বর্মা বলেন, “কেন এটা হল, খোঁজ নিচ্ছি।’’