বাম-কংগ্রেসের মুখ চেয়ে পদ্ম ও তৃণমূল

ভোটের আগে যতই নিচুতলায় সমঝোতা হোক, বোর্ড গড়তে বিজেপির হাত ধরতে পারবে না সিপিএম। আবার তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার তো প্রশ্নই আসে না।

Advertisement

সুস্মিত হালদার ও বিমান হাজরা

কৃষ্ণনগর ও রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০২:০৫
Share:

ভোটের আগে যতই নিচুতলায় সমঝোতা হোক, বোর্ড গড়তে বিজেপির হাত ধরতে পারবে না সিপিএম। আবার তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার তো প্রশ্নই আসে না।

Advertisement

ফলে দুই পঞ্চায়েতেই টানাটানির ছক শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র বক্তব্য, “বিজেপি বা তৃণমূলকে সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না।” অথচ বামেদের সঙ্গে না পেলে দুই দলের পক্ষেই কয়েকটি জায়গায় গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়া কঠিন হবে। ঘোড়া কেনাবেচা ছাড়া কার্যত আর কোনও উপায় থাকবে না।

নাকাশিপাড়া ব্লকের বীরপুর-২ ও ধর্মদা গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টিতে এই একই পাটিগণিত। প্রথমটিতে মোট আসন ১৫টি। তার মধ্যে তৃণমূল সাত আসন পেয়েছে। বিজেপি আর বাম পেয়েছে চারটি করে। ধর্মদা পঞ্চায়েতে ১৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি ছ’টি করে পেয়েছে। বামেরা পেয়েছে পাঁচটি। কংগ্রেস ও নির্দল একটি করে।

Advertisement

নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁয়ের দাবি, “কোনও দলের সমর্থন আমরা নেব না। আমাদের দলে অনেকেই যোগ দিতে চাইছেন। তাঁদের নিয়েই বোর্ড গঠন করব।” বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহাদেব সরকার আবার দাবি করেন, “মানুষ তৃণমূলের হাত থেকে মুক্তি চাইছে। তাই আমরা সমস্ত দলের সদস্যদের কাছে বিবেক ভোট চাইব। এবং জিতব।”

ফরাক্কা ব্লকেও তিনটি পঞ্চায়েতে একই ধরনের জট। বাম বা কংগ্রেসের মুখাপেক্ষী না হয়ে তৃণমূল বা বিজেপি কেউ বোর্ড দখল করতে পারবে না। ২৬ আসনের বেনিয়াগ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ১২টি, বিজেপি আটটি, কংগ্রেস পাঁচ ও সিপিএম এক আসন পেয়েছে। বেওয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৫টি। তৃণমূল পেয়েছে ছ’টি, কংগ্রেস পাঁচটি আর বিজেপি পেয়েছে চারটি আসন। বেওয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পাঁচটি ও সিপিএম একটি আসন পেয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপি পেয়েছে তিনটি করে আসন।

তৃণমূলের ফরাক্কার ব্লক সভাপতি এজারত আলির দাবি, বেনিয়াগ্রামে কংগ্রেসের দু’জন এবং সিপিএমের এক জন ইতিমধ্যেই তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। বেওয়া-১ পঞ্চায়েতেরও দু’জন কংগ্রেস সদস্য তাঁদের দিকে চলে এসেছেন। তবে বেওয়া-২ গ্রামং পঞ্চায়েত ঝুলেই রয়েছে।

কংগ্রেসের বিধায়ক মইনুল হকের আক্ষেপ, “বোর্ড গঠন কবে হবে তা এখনও অনিশ্চিত। বিজয়ী প্রার্থীদের তো এত দিন আগলে রাখা সম্ভব নয়। কেউ যদি দলবদল করতে চায় করবে। তবে যদি ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েতে কোথাও তৃণমূল বিরোধী বোর্ড গড়ার সুযোগ থাকে, কংগ্রেস সাহায্য করবে।” বিজেপির (উত্তর) মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি সুজিত দাসের বক্তব্য, “তৃণমূলকে আটকাতে আমরা সকলের সঙ্গে হাত মেলাতে প্রস্তুত।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতিই আসুক, তৃণমূল বা বিজেপিকে সমর্থন দেব না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement