এলাকার মানুষের দানে মাদ্রাসার জমিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করছে পুলিশ। রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের কানুপুর গ্রামে খারেজি মাদ্রাসায় রবিবার চালু করা হবে ওই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ওই দিনই পাশে একটি ক্লাবঘরে প্রায় আড়াই হাজার বই দিয়ে চালু করা হচ্ছে গ্রন্থাগারও।
কানুপুরের ওই মাদ্রাসাটিতে ৮৫ জন ছাত্র মূলত ধর্মীয় শিক্ষার পাঠ নেয়। বেশির ভাগই আবাসিক। রোজ সকাল ১১টা পর্যন্ত চলবে তাদের কম্পিউটার শিক্ষা। বিকেলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পড়ুয়াদের ক্লাস হবে। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রঘুনাথগঞ্জ থানার ১০ জন সিভিক কর্মীকে ইতিমধ্যেই বহরমপুর থেকে কম্পিউটার শিখিয়ে আনা হয়েছে।
কানুপুরের নব জাগরণ ক্লাবের সম্পাদক লতিফুল শেখ জানান, প্রায় দশ হাজার বাসিন্দার পাশাপাশি দু’টি গ্রাম কানুপুর ও খিদিরপুর। ৯০ শতাংশেরও বেশি সংখ্যালঘু। গ্রামে একাধিক স্কুল থাকলেও ১৯৭৯ সাল থেকে চলছে মাদ্রাসাটি। সেটির প্রধান মৌলানা ফকির মহম্মদ বলেন, “গোটা দুনিয়া যে ভাবে ডিজিট্যাল শিক্ষায় এগিয়ে চলেছে সেখানে মাদ্রাসার ছেলেরা তাতে সামিল হতে না পারলে পিছিয়ে পড়বে।”
খুশি বীরভূমের কুলরার আবাসিক ছাত্র, দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল মান্নান। সে বলে, “আমার ইচ্ছা বিজ্ঞান পড়ার। কম্পিউটার শিক্ষা সেই সুযোগ করে দেবে।” ওই জেলারই পাথরা থেকে আসা একাদশ শ্রেণির ছাত্র ওসমান শেখ আগে কম্পিউটার শিখছিল। মাদ্রাসায় চলে আসায় তা আর হয়ে ওঠেনি। সে বলে, “এখন সবই অনলাইন হয়ে যাচ্ছে। মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরা অনেকটাই পিছিয়ে।”
রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈকত রায় বলেন, “মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা পেলে এলাকার সমস্ত ধর্মীয় মাদ্রাসাতেই কম্পিউটার বসিয়ে দেওয়া হবে। ইন্টারনেট সংযোগে মাদ্রাসার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সমস্ত অনলাইন ব্যবস্থার সুযোগ নিতে পারবে ছেলেমেয়েরা।” তিনি জানান, রবিবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর সময়েই তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে, কাদের আর্থিক দানে উপকৃত এই প্রকল্প।
লতিফুল জানান, তাঁদের গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দাই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া। উঁচু ক্লাসে বা কলেজে উঠে পাঠ্যপুস্তক কেনা সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে। পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে তারা। তাই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করার পাশাপাশি গ্রন্থাগার চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল পুলিশের কাছে। তারা সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার বই কিনে গ্রন্থাগারটি সাজানো হচ্ছে।