চাষের জমি থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে মাটি।
মাটি মাফিয়ারা গঙ্গার মাটি কেটে নিয়ে যেত রাতের অন্ধকারে। গঙ্গা ভাঙন শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষ গঙ্গার মাটি কাটতে দেয় না। তাই তাদের চোখ এখন চাষের জমি। ফরাক্কার বল্লালপুর, জিঘরি, আকুড়া, শমসেরগঞ্জের, মালঞ্চা, দোগাছি, লস্করপুর, সুতির বাউরিপুনি, সুজনিপাড়া, প্রভৃতি এলাকার দিকে।
সেখান থেকে চাষযোগ্য কৃষি জমি থেকে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে চলছে মাটি কাটার কাজ। অব্যাহত মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় মাটি মাফিয়াদের ট্রাক্টর চললেও নীরব ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর সহ অনান্য প্রশাসন। এই নিয়েই ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরেই অবাধে চলছে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। সুতির বাউড়িপুনি এলাকা থেকে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে সেই মাটি ঝাড়খণ্ড কিংবা শমসেরগঞ্জের দোগাছি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কৃষি জমি থেকে জেসিবি দিয়ে রীতিমতো মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রাক্টরে। দাবি, বিষয়টি নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। তবে শমসেরগঞ্জের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক তাপস পাল বলেন, ‘‘যেখানেই মাটি কাটার খবর মিলেছে সেখানেই হানা দিয়ে ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ মাটি মাফিয়ারা কোনও এক জমি থেকে উপরের অংশ তুলে নেওয়ার কথা বলে সেই জমিকে পুকুরে পরিণত করছে। পাশের জমির মাটি কেটে নিচ্ছে জমির মালিককে না জানিয়ে। তাদের কোনও কথা বললে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে কোন সুরাহা হয় না।
শমসেরগঞ্জের ভুমি ওভুমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক তাপস পাল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি ট্রাক্টরও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রোধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’’
সিপিএমের আজাদ আলি বলেন, ‘‘বীরভুমে বালি আর জঙ্গিপুর মহকুমায় মাটি একই নিয়মে চুরি চলছে। গঙ্গার মাটি কাটা হত সে সময় শাসক দলের নেতাদের মদতে, এখন কৃষি জমি থেকে মাটি চুরি হচ্ছে তাদেরই মদতে। সাধারণ মানুষ যেমন গঙ্গা মাটি কাটতে বাধা দিয়েছেন, একদিন জমির মাটি কাটাও বন্ধ করবে সাধারণ মানুষ।’’ তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, এ সব দাবি অযৌক্তিক।
তবে পুরো মুর্শিদাবাদ জুড়েই মাটি কাটা নিয়ে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তাতে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন।