—প্রতীকী চিত্র।
‘বলে দিয়েছি ওটাই লাগবে, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট আমার। কোনও কথা হবে না।’ জলঙ্গি বিধানসভা এলাকার কাতলামারি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ধনঞ্জয় মণ্ডলের এমনই বক্তব্যের অডিয়ো শুক্রবার থেকে সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল (আনন্দবাজার ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। ধনঞ্জয় অবশ্য ওই অডিয়োর সত্যতা স্বীকার করেনি। যদিও এই অডিয়ো নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে শাসক দল তৃণমূল। সদ্য তাদের দলে যোগ দেওয়া প্রধান এখন গলার কাঁটা তৃণমূলের। কারণ খুব কম সময়ে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে ধনঞ্জয়। শাসক দলের নেতাদের দাবি, দল যখন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলছে, ঠিক সেই সময় সার্টিফিকেট নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না। আর বিরোধীদের দাবি, ধনঞ্জয় মণ্ডলের এমন কীর্তি নতুন নয়। কংগ্রেসে থাকাকালীন হাত পাকিয়েছে সার্টিফিকেট বিক্রি করে তোলাবাজিতে। আর তা নিয়ে প্রতিবাদ করায় দলবদল করছেন।
একুশে জুলাই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন ‘বিত্ত নয়, বিবেক চাই।’ কিন্তু অভিযোগ, সেই বক্তব্যের পর এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই বিবেকের চরম উদাহরণ খাড়া করেছেন সীমান্তের কাতলামারী দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ধনঞ্জয় মন্ডল। অভিযোগ, ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক জন বাসিন্দা ওয়ারিশান সার্টিফিকেট চাইতে গেলে নগদ ৬০০ টাকা চেয়ে বসেন ধনঞ্জয়। রীতিমতো দাদাগিরির সুরে বলতে থাকেন, ‘ওয়ারিশ সার্টিফিকেট আমার। এ নিয়ে কোন কথা হবে না। যা বলে দিয়েছি সেটাই লাগবে।’ যদিও অডিও ছড়িয়ে পড়ায় কিছুটা বিপাকে পড়ে ঢোক গিলেছেন ধনঞ্জয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ও সব মিথ্যা। আমি ব্যস্ত আছি, রাখুন পরে কথা হবে।’’
তবে প্রধান ধনঞ্জয় যতই অস্বীকার করুক না কেন, এলাকার বাসিন্দা থেকে তার দিন কয়েক আগের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা কংগ্রেসের অনেকেই বলছেন, ভাইরাল অডিয়োর বক্তব্য পুরোপুরি ধনঞ্জয়ের। এখন বিপাকে পড়ে অস্বীকার করছে। রানিনগর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি মমতাজ বেগম ওরফে হীরা বলেন, ‘‘এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়, ধনঞ্জয়ের এই অভ্যাস পুরানো। আমাদের দলের প্রধান হয়েই সে এই প্র্যাকটিস শুরু করেছিল। আমরা প্রতিবাদ করায় দল ছেড়েছে। খুব ভাল ভাবে জানে শাসক দলে গেলে কেউ কিছু বলবে না।’’
জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলছেন, ‘‘আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, তবে কেবল ওই গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, জলঙ্গি বিধানসভা এলাকার আরও একটি গ্রাম পঞ্চায়েত সার্টিফিকেটের নামে টাকা তুলছে বলে খবর পেয়েছি। বাইরে আছি এলাকায় ফিরে গোটা ঘটনার খোঁজ নিয়ে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।’’
জেলা তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্য, বারবার সচেতন করার পরেও এই ধরনের কিছু জনপ্রতিনিধির জন্য মুখ পুড়ছে দলের।