শান্তিপুর থানা।
আইনজীবীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল শান্তিপুর থানার ওসি সুব্রত মালাকারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে শুক্রবার রানাঘাট বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রানাঘাটের এসডিপিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রানাঘাটের আইনজীবী শুভেন্দু ঘোষ ও সুস্মিতা কর পুরনো একটি মামলার বিষয়ে শান্তিপুর থানায় গিয়েছিলেন। ওই মামলার তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে আইনজীবীরা দেখাও করেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘থানা থেকে বেরিয়ে আসার সময় অপরিচিত কয়েক জন আইনজীবীর পরিচয় জানা সত্ত্বেও আমাদের হুমকি দেয়।" তখনই ওই দুই আইনজীবী থানায় ফিরে গিয়ে ওসি সুব্রত মালাকারকে বিস্তারিত ঘটনার কথা জানান। আইনজীবীদের পক্ষ থেকে তখন অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে গেলে ওসি সেই অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, আইনজীবীদের হুমকি দেওয়া অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের থানায় ডেকে তাদের দিয়েই মিথ্যে অভিযোগ লিখিয়ে নিয়ে আইনজীবীদের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। রানাঘাটে ফিরে আইনজীবী শুভেন্দু ঘোষ ঘটনার কথা লিখিত আকারে বার অ্যাসোসিয়েশনকে জানান।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকের পর বারের পক্ষ থেকে রানাঘাটের এসডিপিও-র কাছে শান্তিপুর থানার ওসি ও অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃন্ময় চক্রবর্তী বলেন, "ওসি আমাদের দুই আইনজীবীর সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা কখনওই কাম্য নয়। এসডিপিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সে জন্য আমাদের কাছে সময়ও চেয়েছেন তিনি। ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নিলে আমরা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করব।’’
রানাঘাটের এসডিপিও শৈলজা দাস বলেন, ‘‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ওসি সুব্রত মালাকার। তাঁর দাবি, ‘‘এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৩১ মার্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় ওসি সুব্রত মালাকারকে শোকজ করে রানাঘাট মহকুমা আদালত। সে সময় তিনি ধানতলা থানার ওসি ছিলেন। জমি নিয়ে মামলাকারী এক বৃদ্ধাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাধ্য হয়ে ওই বৃদ্ধা রানাঘাট আদালতের দ্বারস্থ হন। বিচারক ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরানোর জন্য। সেই নির্দেশ মানেননি তিনি। তার পরেই বিচারক ওসিকে শোকজ় করেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূলের হয়ে সমাজমাধ্যমে প্রচারেরও অভিযোগ ওঠে ওই ওসির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় পথে নেমেছিল বিজেপি।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমারসানি রাজকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি তোলেননি। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।