নকলের প্রস্তাব দিল কলেজ, অভিযোগ

দল বেঁধে ‘ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশন’-এর পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। সিট পড়েছে জলঙ্গির একটি বেসরকারী কলেজে। রাতেই তাই সেই কলেজের ফাঁকা হস্টেলে সামান্য টাকার বিনিময়ে খাওয়া-থাকার ব্যবস্থাও ছিল।

Advertisement

সুজাউদ্দিন

ডোমকল শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল কিছু দিন ধরেই। কখনও ঢিলেঢালা প্রশ্নপত্র কখনও বা কলেজ কর্তৃপেক্ষর ‘উদারতা’— অনুযোগ কম ছিল না। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল ‘গণ টোকাটুকি’র খোলা প্রস্তাব দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের টাকা চাওয়ার ঘটনা। এ ব্যাপারে জলঙ্গির ওই কলেজের বিরুদ্ধে সরাসরি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেব।’’

Advertisement

দল বেঁধে ‘ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশন’-এর পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। সিট পড়েছে জলঙ্গির একটি বেসরকারী কলেজে। রাতেই তাই সেই কলেজের ফাঁকা হস্টেলে সামান্য টাকার বিনিময়ে খাওয়া-থাকার ব্যবস্থাও ছিল। সম্প্রতি সেই পরীক্ষা দিতে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে এসেছিলেন ইসাহাক সেখ এবং এমদাদুল করিম। রাতে তাঁরা ছিলেন জলঙ্গির সেই কলেজ-হস্টেলে। অভিযোগ, জলঙ্গির পাজরাপাড়া এলাকার ওই কলেজে খাওয়া দাওয়ার পরে ঘরে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। প্রস্তাবটা এসেছিল তখনই। ইসফাক জানান, ওই কলেজের মালিক আলতাফ আলম এসে তাঁদের সরাসরি বলেন, ‘হল ম্যানেজের জন্য টাকা দিতে হবে। না হলে অবাধে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না।’ এমনকি টাকা দিলে ‘টুকলি’ও সরবরাহ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন বলে অভিযোগ। আলতাফ আলম অবশ্য সরাসরি সে অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। বলছেন, ‘‘একেবারে মিথ্যা কথা, আদতে কড়া গার্ড দেওয়ার জন্য ওই ছাত্ররা এমন অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’ তবে, বেসরকারি এই কলেজগুলি সম্পর্কে অভিযোগ কম নয়। কখনও পড়ুয়াদের কাছ থেকে কখনও আবার পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ কম নেই। মাস ছয়েক আগেও জলঙ্গির একটি কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছিল পড়ুয়ারা।

এমদাদুলের দাবি, ‘‘সিট পড়েছিল জলঙ্গির পাজরাপাড়া স্যাটালাইট টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে।’’ তিনি বলছেন, ‘‘কলেজের মালিক আলতাফ আলম বলেন, টুকতে দেব তবে, টাকা দিতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার জন্য হাজার টাকা করে না দিলে কড়া গার্ড দেওয়া এমনকি খাতা জমা না নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।’’ ইসফাক বলছেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের অনেকেই, ‘এত টাকা নেই’ বললে চলে যান আসতাফ। পরে এসে ‘টাকা ম্যানেজ করুন’ বলে হুমকিও দিয়ে যান।’’

Advertisement

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) নীহারকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জেলায় ৪১ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ বার পরীক্ষা হয়েছে। আমরা ১৭টি কেন্দ্র নিয়ে এনআইওএসের কাছে আপত্তি তুলেছিলাম। সেগুলি জলঙ্গি-ডোমকল এলাকায়। কিন্তু গোটা বিষয়টি এনআইওএস কলকাতা থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে, আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই
পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির উপরে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement