অভিযোগপত্র হাতে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যা সুপর্ণা বর্মণ এবং তাঁর স্বামী কার্তিক হালদার। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন স্ত্রী। ঠিক তার কিছু দিনের মাথায় কর্মস্থলে অনিয়মিত যোগদানের অভিযোগে বরখাস্ত হলেন সিভিক ভলান্টিয়ার স্বামী। যদিও ওই যুবকের অভিযোগ, তাঁকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনে রয়েছে রাজনীতি। তাঁর দাবি, পুলিশের তরফ থেকেও তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। খোদ শান্তিপুর থানার ওসিও এই চেষ্টা করেছেন। শাসকদল এবং পুলিশ, দুই তরফেই অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। উল্টে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট ২৯টি আসন। তৃণমূল জিতেছে ১৩টিতে। বিজেপি জয়ী হয় ১৬টি আসনে। এই পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হন শান্তিপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার কার্তিক হালদারের স্ত্রী সুপর্ণা বর্মণ। জয়ীও হন ভোটে। কিছু দিন আগে ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন করেছে বিজেপি। কার্তিকের অভিযোগ, তার পর হঠাৎ করে চাকরি হারিয়েছেন তিনি।
সুপর্ণার অভিযোগ, তিনি বিজেপির হয়ে ভোটে জেতার কারণেই স্বামীর চাকরি গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটে দাঁড়ানোর সময় থেকেই বিভিন্ন ধরনের হুমকি আসছিল। ভোটে জেতার পরও কখনও টাকার প্রলোভন দেওয়া হয়েছে। কখনও তাতে রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি এসেছে। তাতেও যখন দল ছাড়তে রাজি হলাম না, তখন আমার স্বামীকে চাকরি হারাতে হল।’’ এই নিয়ে নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নানকে একটি লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন সুপর্ণার স্বামী কার্তিক। অন্য দিকে, পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, সরকারি দায়িত্বে গাফিলতির কারণে কার্তিককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার রাজনীতিতে চাপানউতর শুরু হয়। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার সরাসরি তোপ দাগেন শান্তিপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘ওই থানার ওসি তৃণমূলের প্রমোশন নিয়ে এসেছেন।’’ ওসিকে তৃণমূলের ‘দলদাস’ বলে কটাক্ষ করেন সাংসদ। পাল্টা তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ প্রশাসনিক বিষয়ে দলের সভাপতি হিসাবে কোনও মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবুও বলব, তৃণমূল এই রাজনীতি করে না।’’