চেনাই দায়। ডোমকল রবীন্দ্র নজরুল মঞ্চে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল প্রেক্ষাগৃহ। বছর তিনেক আগে সেই প্রেক্ষাগৃহ, রবীন্দ্র নজরুল ভবনের উদ্বোধনও হয়েছিল ঘটা করে। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এসে উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন।
যা দেখে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন ডোমকলের মানুষ। এলাকার সাংস্কৃতিক চর্চায় এ প্রেক্ষাগৃহ যে বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে তা নিয়ে দ্বিমত ছিল না কারও।
কিন্তু বছর কয়েক যেতে না যেতেই সেই প্রেক্ষাগৃহ এখন ‘সবুজ সাথী’র সাইকেলের গুদাম ঘর। চারদিকে থরে থরে সাজানো রয়েছে সাইকেলের যন্ত্রাংশ। তারই মাঝে জনা কয়েক মিস্ত্রি ঠকাঠক আওয়াজ তুলে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রশাসনের দাবি, ওই প্রক্ষাগৃহ শেষ হতে ঢের দেরি। এখনই সেই কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। ফলে সেটি ফাঁকাই পড়েছিল। অনেকটা জায়গা মিলবে এই ভেবে প্রেক্ষাগৃহটি সাইকেলের গুদাম করা হয়েছে। ডোমকলের বিধায়ক আনিসুর রহমান উদ্যোগী হয়ে শুরু করেছিলেন প্রেক্ষাগৃহের কাজ। তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্র নজরুল ভবন তৈরির জন্য কার কাছে না হাত পেতেছি। সাংসদ বিধায়কেরা অনেকেই তাঁদের তহবিল অর্থ সাহায্যও করেছেন। কিন্তু এখন আর কেউই উদ্যোগী নন। প্রশাসনও উদাসীন। ফলে এখন গুদাম ঘরে পরিণত হয়েছে সেটি।’’
এক সময় ডোমকলের মানুষ এই প্রেক্ষাগৃহটি ঘিরে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন। ডোমকল এখন পুরসভা। শহরে সাংস্কৃতিক চর্চা চাড়াও সরকারি নানা অনুষ্ঠানের জন্য এমন একটি প্রেক্ষাগৃহের খুব প্রয়োজন।
ডোমকল বইমেলা কমিটির সদস্য মতিউর রহমান বলেন, ‘‘প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সাংস্কৃতিক চেতনার অভাবে একটি সম্ভাবনার মৃত্যু হতে বসেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক নেতারা দলীয় স্বার্থ আর সঙ্কীর্ণ রাজনিতির বাইরে বেরোতে পারলেন না। ফলে রবীন্দ্র নজরুল ভবন আজ গুদামে পরিণত হয়েছে।’’
সহকারী পুরপ্রধান প্রদীপ চাকির কথায়, ‘‘বিষয়টি বেশ দৃষ্টিকটু। প্রেক্ষাগৃহটি ফের চালু করার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’
ডোমকলের মহকুমাশাসক তাহিরুজ্জামান বলেন, ‘‘প্রেক্ষাগৃহটি সাজাতে অনেক টাকা লাগবে। টাকা পাওয়া গেলে ফের কাজ শুরু হবে।’’