ভরতপুরে বোমাবাজির ঘটনা। —নিজস্ব ছবি।
ভোট মিটলেও হিংসার ঘটনা কমছে না মুর্শিদাবাদে। শনিবার সকালে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটল। ভরতপুরের বর্তমান এবং প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামী গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা শুরু হয়। ক্রমে তা বড় আকার নেয়। শুরু হয় বোমাবাজি। এই ঘটনায় দু’পক্ষের পাঁচ জন আহত হয়েছেন বলেই খবর। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঝামেলার মধ্যে পড়ে এক পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকালে উজনিয়া গ্রামে ভরতপুর ২ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি মহম্মদ আজহারউদ্দিনের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি শুরু করে একদল দুষ্কৃতী। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান প্রাক্তন সভাপতির পরিবারের সদস্যেরা। আহতদের মধ্যে একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট না পাওয়া নিয়ে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক সভাপতির অনুগামীদের ঝামেলা শুরু হয়েছিল। বিধায়কের নির্দেশেই তাঁরা নির্দলের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন। ভোট মিটে যাওয়ার পর বিধায়কের হাত ধরে আবার তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে বিধায়ক অনুগামীদের নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করতে দেননি বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান। পাল্টা তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। শনিবার সেই গোলমাল বড় আকার ধারণ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সালার থানার পুলিশ। বোমার আঘাতে আহত হন এক পুলিশকর্মী। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশবাহিনী।
তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, আজহারউদ্দিনকে ভরতপুর ২ ব্লকের সভাপতি নির্বাচন করেছিলেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায়। জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর অপূর্ব সরকার তাঁর জায়গায় মুস্তাফিজুর রহমানকে ব্লক সভাপতি করেন। আজহারউদ্দিনকে মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক করা হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ আসনে নির্দল হিসেবে প্রার্থী হন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আজহারউদ্দিন। পরবর্তী কালে বিধায়কের হাত ধরে ফের তৃণমূলে যোগ দেন।
বর্তমান সভাপতির অভিযোগ, বিধায়কের ইন্ধনে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষ নিয়েছেন। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক ও প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি অপূর্ব সরকার। তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম্য বিবাদ নিয়ে সমস্যা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’
শনিবারের ঝামেলা নিয়ে ভরতপুরে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘জেলা নেতৃত্বকে বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনও কমিটি তৈরি করে দেয়নি। শুনেছি মুস্তাফিজুর রহমান ব্লক সভাপতি, তিনি জেলা সম্পাদকের বাড়িতে বোমাবাজি করেছেন। পুলিশকে বলেছি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।’’