চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
ভাগীরথীর ভাঙন রোধ, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ-সহ বিভিন্ন দাবিতে পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ভাঙন এলাকার মানুষ। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কল্যাণী ব্লকের সরাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধেরা ওই পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে। উত্তেজিত জনতা গাড়িও ভাঙচুর করে। ওই ঘেরাওয়ের ফলে প্রায় চার ঘণ্টা সেখানে আটকে ছিলেন পঞ্চায়েতের কর্মীরা। শেষে পুলিশ এসে তাঁদেরকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে যায়।
এ দিন দুপুর দু’টোর সময়ে পঞ্চায়েত অফিস থেকে খানিক দূরে রাস্তা অবরোধ শুরু করে ভাঙনের কবলে পড়া বাসিন্দারা। ওই অবরোধের ফলে চাকদহ-কল্যাণী রাজ্য সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে গাড়ি আটকে যায়। ঘণ্টাতিনেক পর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয়েরা। ধীরে ধীরে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অবরোধকারী নুরউদ্দিন মণ্ডল, নীলধর মণ্ডলেরা বলছেন, “আমাদের এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙন হচ্ছে। দুর্গাপুর গ্রাম পুরোটাই নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। সরাটি উত্তর গ্রামটিও চলে যেতে বসেছে। চাষের জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া, তাঁদের জন্য ঘর করে দেওয়া হয়নি। তাঁরা অসহায় অবস্থায় রয়েছে। আমাদের জন্য পঞ্চায়েত কিছু করেনি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কিন্তু কাজ কিছুই করা হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা সমস্যা সমাধানের দাবিতে এদিন অবরোধ করেছিলাম।”
গ্রাম পঞ্চায়েতপ্রধান ইমিলি ইয়াসমিন বলেন, “পঞ্চায়েতের পক্ষে নদীর ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। আমরা সব সময়ে গ্রামবাসীদের পাশে থেকেছি। তাঁদের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে এসে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করিয়েছি। সবই ঠিক চলছিল। পিছন থেকে বিজেপি ওঁদের দিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।”
যদিও তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। কল্যাণী মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি দশরথচন্দ্র অধিকারী এর জবাবে বলেন, “ব্যর্থতা ঢাকতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন পঞ্চায়েত প্রধান। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এই ধরনের কাজে বিশ্বাসী নই। ভাঙন এলাকায় পঞ্চায়েত কোনও কাজ করেনি। ঘটনার খবর পেয়ে পরে সেখানে গিয়েছিলাম। কাজ যাতে তাড়াতাড়ি শুরু হয়, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছে দাবি জানিয়েছি।” কল্যাণীর মহকুমাশাসক ধীমান বারুই বলেন, “বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন ওই ভাঙন-কবলিত এলাকার মানুষেরা। তাঁদের দাবিগুলি আন্তরিকতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শীঘ্র সে কাজ শুরু হবে।”