প্রতীকী ছবি।
দেড় দশকে যে প্রকল্প ভরসা জুগিয়েছিল গ্রামীণ মানুষকে, বরাদ্দ কমায় সেই প্রকল্পে কাজ পাওয়ার উপরে এখন প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলে পড়ল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর ফলে, মুর্শিদাবাদের মতো পিছিয়ে পড়া জেলায় শ্রমিকেগ কর্ম সংস্থানের জন্য বিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া বাড়বে।
শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেটে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাই করায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার করার বদলে মুর্শিদাবাদের মতো পিছিয়ে পড়া জেলায় তার বিরূপ প্রভাব পড়তে চলেছে বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে কাজের পরিধিও কমতে বাধ্য।
গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার ৭১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল এই প্রকল্পে। চলতি বাজেটে তা কমিয়ে ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ কমে যাওয়ায় লোকজন কাজও কম পাবেন। ফলে মুর্শিদাবাদের মতো পিছিয়ে পড়া জেলার ক্ষেত্রে ক্ষতি হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে তৎকালীন ইউপিএ সরকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সূচনা করেছিল। প্রথম দিকে মূলত রাস্তা তৈরি কিংবা পুকুরের মাটি কাটার কাজ হলেও পরে পরিধি বেড়েছে। স্থায়ী সম্পদ তৈরি করতে অন্য প্রকল্পের সঙ্গে যৌথভাবে শৌচাগার নির্মাণ, বাগান তৈরি, রাস্তা তৈরি, নদী ভাঙন রোধ, খেলার মাঠ সংস্কার, ছাগল-গরু, হাঁস মুরগি পালনের জন্য পরিকাঠামো নির্মাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও এর আওতায় আনা হয়েছিল। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে রাজ্য সরকার আগেও কেন্দ্রের সমালোচনা করলেও গত বছরও এই প্রকল্পে ভারত সেরা হয়েছে এই রাজ্য। গত ডিসেম্বরের কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ঘোষণা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দেশে সেরার তকমা পেয়েছে। এ হেন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় এই সব প্রকল্পের কাজও কমবে। জেলা প্রশাসন থেকে সমীক্ষা চালিয়ে চলতি বছরে মুর্শিদাবাদ জেলায় এক কোটি ৪৪ লক্ষ শ্রম দিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার বাজেট বরাদ্দ কমানোয় তার উপরে প্রভাব পড়বে বলে প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘গ্রামে কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। গ্রামের দিক নজর দিলেই দেখতে পাবেন অনেক ছোট ছোট কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয়েছে। বরাদ্দ কমলে সে সব কাজে তো ধাক্কা খাওয়া স্বাভাবিক।’’ যার পরোক্ষ ফল, ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে। মুর্শিদাবাদ জেলায় জঙ্গিপুরে নামমাত্র হাতে গোনা কয়েকটি শিল্প সংস্থা রয়েছে। ফলে জেলার বহু লোক ভিন রাজ্যে কাজে যান। এ জেলায় কাজের সংস্থান না থাকায় কেরল, মুম্বইয়ের পাশাপাশি ভিন দেশেও
যান অনেক।