Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাস যোজনার নালিশ খুঁটিয়ে দেখল কেন্দ্রীয় দল

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ প্রতিনিধি দলের সামনে অভিযোগ তোলেন, সমীক্ষার সময়ে তাদের কাঁচা বাড়ি ছিল, কোনওক্রমে একটি পাকা বাড়ি তৈরি করার ফলে বাদ পড়েছে তাঁদের নাম।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

রানিনগর  শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪১
Share:

দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দল রানিনগর ১ ব্লকের হেড়ামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগ। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

মঙ্গলবারের পর বুধবারও দিনভর ‘সেন্ট্রাল লেভেল মনিটর’-এর দুই সদস্যের দল রানিনগর ১ ব্লকের হেড়ামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখলেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগ ওঠা একাধিক বাড়ি।

Advertisement

এ দিন দুপুর বারোটা নাগাদ প্রথমে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর গ্রামে গিয়ে বেশ কিছু বাড়ি পরিদর্শন করেন তাঁরা। তারপরে সেখান থেকে রওনা দিয়ে দুর্লভপুর হয়ে কাঞ্চনপুর হুদা হেড়ামপুরে যায় দুই সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ প্রতিনিধি দলের সামনে অভিযোগ তোলেন, সমীক্ষার সময়ে তাদের কাঁচা বাড়ি ছিল, কোনওক্রমে একটি পাকা বাড়ি তৈরি করার ফলে বাদ পড়েছে তাঁদের নাম। যদিও কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের দাবি, এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে তারপরে ঠিক না ভুল সেটা বলা সম্ভব হবে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ওই তদন্ত চলে ওই পঞ্চায়েত এলাকায়।

তবে জেলায় পা রেখেই সোজা রানিনগর ১ ব্লক এবং সেই ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে পরপর দুদিন টানা চরকির মতো ঘুরপাক খেল সেন্ট্রাল লেভেল মনিটরিং দল। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে সেই এলাকা নিয়ে।

Advertisement

বিরোধীদের দাবি রানিনগর ১ ব্লকে আবাস যোজনা নিয়ে আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে আর নেতাদের কাছের লোকদের দোতলা বাড়ি থাকার সত্ত্বেও দেওয়া হয়েছে নতুন করে আবাস যোজনার বাড়ি। পাকা এবং বড় বাড়ির মালিককে টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ওই প্রকল্পের ঘর। রানিনগর ১ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আবু হানিফ মিঞা বলছেন, দোতলা তিন তলা বাড়ির মালিকের নামেও আবাস যোজনার ঘর আছে। তা নিয়ে অনেক অভিযোগও হয়েছে। কিন্তু সেন্ট্রাল মনিটরিং দলকে বিপথে পরিচালনা করা হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে আমাদের।’’

রানিনগর ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের ৫৩১ টি বাড়ি নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্লক প্রশাসন তদন্ত করে মাত্র ২৫টি বাড়ি ছাড়া সবগুলোই বাতিল বলে গণ্য করেছে। বেশি অভিযোগ হওয়ার কারণেই হয়ত ওই এলাকায় তদন্ত করছেন আধিকারিকেরা।

রানিনগর ১ ব্লকের বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকেই আমরা কেন্দ্রীয় ওই প্রতিনিধি দলকে সব রকম ভাবে সাহায্য করে যাচ্ছি। তারা যেখানে যেমন ভাবে যেতে চাইছেন সে ভাবেই আমরা নিয়ে যাচ্ছি।’’

মঙ্গলবারও রানিনগরের রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর ছাড়া আরও একটি গ্রামে আবাস যোজনার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করেছিল কেন্দ্রীয় ওই দুই সদস্যের দল। এদিন সকাল সকাল তাঁরা ব্লক অফিসে এসে আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। পরে দুপুর ১২ টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান হেড়ামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে একের পর এক বাড়ি ঘুরে দেখেন তাঁরা। এলাকার একটি জায়গায় জনা কয়েক মহিলা গাড়ির সামনে এসে তাদের অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে খুব একটা আমল দেয়নি সেন্ট্রাল লেভেল মনিটরেরা। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য সঞ্জয় যাদব বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গোটা এলাকা ঘুরে দেখছি আমরা। তবে এখনই কোনটা ঠিক ভুল সেটা বলা সম্ভব নয়। কারণ গোটা বিষয়টি দেখে তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে তারপরেই বোঝা যাবে কোনটা ঠিক কোনটা ভুল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement