প্রতীকী ছবি।
হাঁসখালি গণধর্ষণ-কাণ্ডে ৪৩ পাতার চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। শুক্রবার সকালে রানাঘাট মহকুমা আদালতে মোট ন’জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী। যদিও তাঁদের এক জনকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি বলেই চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। তদন্তভার নেওয়ার ৮৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট জমা দেওয়ায় খুশি নির্যাতিতার পরিবার। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে নির্যাতিতার বাবা বলেন, তাঁদের আশা, তাঁর শীঘ্রই সুবিচার পাবেন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো গত ১৩ এপ্রিল রাতে হাঁসখালি গণধর্ষণ মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। সিবিআইয়ের জমা ওই ৪৩ পাতার ওই চার্জশিটে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্তের সমস্ত বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত ব্রজ গয়ালিকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ। পরে সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর ব্রজের বাবা সমরেন্দ্র গয়ালি-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। চার্জশিটে তাঁদের নাম রয়েছে।
ধৃতদের আইনজীবীদের দাবি, কিশোরীর মৃত্যুর পর তার দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। এমনকি মৃতার বাবার উপস্থিতিতেই শেষকৃত্য হয়েছিল। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার পর ময়নাতদন্ত না করিয়ে এ ভাবে দেহ সৎকার করাটাও আইনত অপরাধ। মৃতার মা অভিযোগে জানিয়েছিলেন, স্বামীর উপস্থিতিতে মেয়ের দেহ শেষকৃত্য হয়। সেই মতোই এফআইআর-এ ওই কিশোরীর বাবার নামও রাখা হয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগেই আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন মৃতার বাবা। তার পর সিবিআইয়ের চার্জশিট থেকে মৃতার বাবার নাম বাদ গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সিবিআই চার্জশিট জমার দেওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর আস্থা ছিল। আশা করছি, এ বার সুবিচার পাব।’’
তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে অংশুমান বাগচি নামে এক অভিযুক্তকে ‘পলাতক’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি বলেই জানান তদন্তকারীরা। আগামী ১১ জুলাই সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ধৃতদের আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চার্জশিটে কী আছে, পরের শুনানিতে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে।’’ প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কিশোরীকে মদ্যপান করিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে নদিয়ার হাঁসখালিতে। এর পর ৫ এপ্রিল ভোরে নিজের বাড়িতেই কিশোরীর মৃত্যু হয়। ৯ এপ্রিল মৃতার মা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার পর ১০ এপ্রিল রাতে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ব্রজ গয়ালিকে গ্রেফতার করা হয়।