পাশাপাশি: ভোটের প্রচারে হাঁটল জোট। নিজস্ব চিত্র
লাল আর তে-রঙ্গা—বৈশাখী হাওয়ায় হু হু করে উড়ছে পতাকা দুটো।
দু’বাড়ির দূরত্ব মেরেকেটে হাত বিশেক। নিবার্চন এলে সেই দূরত্বটা যেন কয়েকশো কিলোমিটার। অনেক সময়ে দু’বাড়ির মাঝে পাঁচিল তোলে পুলিশ।
এ যাবৎ এই চেনা চেহারাটাই দেখে এসেছে ডোমকল। বাম-কংগ্রেসের সেই দূরত্বটাই বুঝি বেমালুম উড়ে গিয়েছে প্রথম বৈশাখের ঝড়ে।
ভোটের বালাই বাবা! মৃদু হাসছেন কংগ্রেস নেতা, ‘‘এ বার আর ছুঁয়ে ছুঁয়ে নয়, পাকাপাকি জোট!’’ জোট ধর্ম মানতে গিয়ে কংগ্রেসের শাওনী সিংহ রায় কখনও ছুটে আসছেন লাল-বাড়ির দরজা ঠেলে কখনও বা এ বাড়ির নেতারা হই হই করে চা খেয়ে আসছেন কংগ্রেসের উঠোনে।
সিপিএমের অনিসুর রহমান অসুস্থ শরীর নিয়েও ঘন ঘন এ বাড়ি ও বাড়ি করার পাঁকে বলে গেলেন, ‘‘এখন কী ঝগড়া করার সময়!’’
দু’পক্ষের আনাগোনায় আদর আপ্যায়নটা ক্রমেই চোখ টাটাচ্ছে তৃণমূলের। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘ওদের আর করারই বা কী আছে!’’
সে সব কথায় কান দিচ্ছে কে? এ বাড়ির লেবু-সরবত তাই ছুটছে ও বাড়িতে আর ও বাড়িতে থেকে হাঁক পড়ছে, ‘চা হয়ে গেল যে!’
তবে, দলের সবাই কি খুশি? দলের নিচু তলার একটা অংশ এই গলাগলিতে তেমন খুশি নয়। তাদের কথায়, ‘‘চক্ষুলজ্জার তো একটা ব্যাপার আছে, দু’দিন আগে যাদের হাতে খুন হয়েছে আমাদের ভাই-দাদা, এখন তারাই কিনা গলায় গলায় আত্মীয়!’’
যা শুনে, শাওনী বলছেন, ‘‘জোট নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা অস্বস্তি ছিল না যে তা নয়। তবে, জোটের গুরুত্ব বুঝতে পেরে এখন অস্বস্তি অনেকটাই গেছে এখন।’’ আর, সিপিএমের নারায়ণ দাস বলছেন, ‘‘ডোমকলের মানুষই জোট চেয়েছিল। কারণ তাঁরা বুঝেছেন তৃণমূল কোনও ভাবে ক্ষমতায় এলে ডোমকলের চেহারা কী হবে।’’।
আর নিজের বাড়িতে বসে সব শুনছেন ৫ নম্ব ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেন। বলছেন, ‘‘একটা সময় যারা একে অপরকে খুন করেছে তারা এখন গলায় গলায় মিলছে। ওদের লজ্জা আছে কিনা ডোমকলের মানুষই ঠিক করবেন।’’