কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নির্দিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হলেও পদক্ষেপ করছিল না তদন্তকারী আধিকারিক। তথ্যপ্রমান বিকৃত করার চেষ্টা হলেও নির্বিকার ছিল স্থানীয় থানার পুলিশ। এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় মৃত তৃণমূল সমর্থক তথা সুতির ইঁট ভাটার মালিক নিশিথ দাসের পরিবার। আবেদনকারীর অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে তদন্তভার থেকে তদন্তকারী আধিকারিককে অব্যাহতি দিল আদালত। বাকি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশ সুপারকে। খুন হওয়া তৃণমূল সমর্থকের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অহিরন এলাকার ইঁট ভাটার মালিক নিশীথ দাসের খুনে পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে মামলা করে তাঁর পরিবার। সেই মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত তদন্তকারী আধিকারিককে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপারকে বাকি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন খোদ বিচারপতি। সেই সঙ্গে ইঁট ভাটার মালিকের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এখন থেকে সংগৃহীত কোনও তথ্য কিংবা তদন্তের ব্যাপারে আর কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না মামলার তদন্তকারী আধিকারিক শিবপ্রসাদ ঘোষ, এমনটাও জানিয়েছে আদালত।
নিহত ইঁট ভাটার মালিকের আত্মীয় বিমান দাস বলেন,“তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় ব্যবস্থা নিচ্ছে না তদন্তকারী আধিকারিক। আদালতের নির্দেশে পুলিশ সুপার সঠিক তদন্ত করবেন বলে আশা করছি।"
উল্লেখ্য, গত ১৪ অগস্ট সন্ধ্যায় খুন হন তৃণমূল সমর্থক নিশিথ দাস (৪০)। তাঁর বাড়ি সুতি থানার অজগরপাড়া মোড়ের কাছে। ওই দিন বিকালে নিশিথ আহিরণ হল্টের কাছে একটি চায়ের দোকানে চা খেয়ে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী মোটরবাইক করে এসে খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় নিশিথবাবুকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ব্যবসায়িক শত্রুতার পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এই খুনের অন্যতম কারণ বলে উঠে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে সুতি ১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি গৌতম ঘোষ ও তাঁর ভাগ্নে কালু ঘোষের নামে অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বারবার সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ করা হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। সেই মর্মেই কলকাতা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল নিশীথ দাসের পরিবার।