—প্রতীকী চিত্র।
শমসেরগঞ্জের ভরা গঙ্গায় ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে একাধিক নৌকাডুবির ঘটনায় আরও এক জনের মৃতদেহ উদ্ধার করল বিএসএফ জওয়ানরা।বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয় এক জনের দেহ। দু’জনের কারওরই পরিচয় এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।
শমসেরগঞ্জে গঙ্গার অপর পাড় মালদার পারদেওনাপুর। কালিয়াচক ৩ ব্লকের অধীনে পড়ে। থানা বৈষ্ণবনগর। কালিয়াচক ৩ ব্লকের বিডিও সুকান্ত শিকদার জানান, নৌকোডুবির সময় অনেক নৌকো ছিল পারলালপুর এলাকার। সবাই ঘরে ফিরলেও এখনও তিন জন নিখোঁজ। তাঁদের নাম দেবব্রত সরকার ওরফে বাবু (৪৫), তাঁর ছেলে দেব সরকার (১৪) ও পার অনুপনগরের স্বরাজ চৌধুরী (৮)। স্বরাজ বাবা নারদ চৌধুরীর সঙ্গে বুধবার গিয়েছিল মাছ ধরা দেখতে।
নারদ বলেন, ‘‘ছেলে কোনওদিন সঙ্গে যায় না। এ দিন বায়না ধরল যাবে বলে। রোদ ঝলমলে ভাল দিন। বড় নৌকো। তাই আর না করিনি।’’ ৫ জন মিলে বড় কাঠের নৌকোয় মাছ ধরতে দুপুর নাগাদ বেরিয়ে যান। যখন মাছ ধরা শুরু করেন তখনই হঠাৎ কোথা থেকে চারিদিক ঘিরে ফেলে কালো মেঘ। সেই সঙ্গে তুমুল ঝড়। গঙ্গার আকার এখন বিশাল। ঝড়ের ফলে প্রচণ্ড ঢেউ ছিল। কোনও কিছু বোঝার আগেই নৌকো উল্টে ভেসে যায় সকলেই জলের স্রোতে। প্রচণ্ড স্রোতে ৫ জনই ভেসে যান। দুই নাবালক ছেলেকে আর কোনও ভাবেই ধরা গেল না। পাড়ে উঠলেন দু’জন। বাকি ৩ জন জলে তলিয়ে গেল। এখনও তাঁদের খোঁজ মেলেনি।
খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন নিখোঁজদের বাড়ি গিয়েছিলেন।তাদের খোঁজে সরকারি ডুবুরিরা নেমেছেন। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ছাড়াও গঙ্গায় স্পিড বোট নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন বিএসএফ জওয়ানেরাও। কিন্তু ভরা গঙ্গায় তাঁদের খুঁজে পাওয়া যথেষ্ট কঠিন বলেই মনে করছেন ডুবুরিরা।
মৎস্যজীবীরা বলেন, “দানা সাইক্লোন আসার কথা ছিল ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে। শমসেরগঞ্জে নৌকোডুবি হয়েছে বুধবার। সে দিন মাছ ধরার কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। আকাশ পরিষ্কার ছিল। তাই ইলিশের লোভে প্রায় শ’খানেক জেলে ছিল গঙ্গায় পারলালপুর ও শমসেরগঞ্জের।”
এ দিন পর্যন্ত বুধবারের ঘটনায় ২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ৩ জন গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছেন।