মহকুমাশাসকের দফতরে চলছে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র
চাপ তৈরি হতেই পিছিয়ে যেতে বাধ্য হলেন মোড়লেরা। চরমহুলা গ্রামের দু’টি পরিবারের উপর থেকে বয়কট তুলে নেওয়া হল।
সোমবার বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন চরমহুলা দক্ষিণপাড়ার দিনমজুর শম্ভু সরকার। রাতেই পুলিশ গ্রামে যায়। মঙ্গলবার সকালে ‘চরমহুলা সমাজ’-এর হয়ে ৫১ জন গ্রামবাসী মহকুমাশাসকের দফতরে হাজির হন। তার মধ্যে পাঁচ জনকে বৈঠকে ডাকেন মহকুমাশাসক দিব্যনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। মোড়লদের প্রতিনিধি অশোক সরকার, বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ প্রেমানন্দ সরকার, রাঙামাটি-চাঁদপাড়া পঞ্চায়েতের সদস্য মুক্তিপদ সরকার, প্রসেনজিৎ সরকার এবং আদম সরকার বৈঠকে হাজির ছিলেন।
মোড়লদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, দুর্গাপুজোয় ধার্য করা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় সপরিবার শম্ভূকে একঘরে করার ফতোয়া দেওয়া হয়। তার পরেও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখায় ভাই সুশীল সরকারের পরিবারকেও একঘরে করা হয়। তাঁদের পরিষেবা দেওয়ায় জরিমানা হয় এক নাপিত, এক মুদি এবং এক চায়ের দোকানির।
প্রায় ঘন্টা দেড়েকের ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন বহরমপুরের বিডিও রাখী পাল এবং বহরমপুর থানার আইসি শৈলেনকুমার বিশ্বাস। তাঁদের সামনেই মোড়লেরা দাবি করেন, চাঁদা না দেওয়া বয়কটের অভিযোগ মিথ্যা। গত বছর পুজোর সময়ে শম্ভূ ‘সমাজ’ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ধার নেন। এ বছর পুজোর সময়ে দেনা শোধ করার কথা ছিল। তা তিনি শোধ করেননি বলেই একঘরে করা হয়। শম্ভু ধারের কথা অস্বীকার করেন। মোড়লেরা নথিপত্র বের করে দেখানোর পরে শেষ পর্যন্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
প্রশাসনের তরফে মোড়লদের বলা হয়, কারণ যা-ই হোক, বয়কট করা চলবে না। শম্ভু মাসিক কিস্তিতে টাকা শোধ করবেন। মোড়লেরা তা মেনে নেন। মোড়ল দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘ওই টাকা আদায়ের বিষয়টি আমাদের সমাজের প্রেমানন্দ সরকার দেখছেন। তবে সামাজিক ভাবে ওই দু’টি পরিবারকে যে বয়কট করে রাখা হয়েছিল, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’