— রাখি মণ্ডল
এক মহিলার দেহ উদ্ধার করল জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। মৃতের নাম রাখি মণ্ডল (১৮)। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জিয়াগঞ্জের জোনপুরে।
ওই ঘটনার পর মৃতার বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে করা লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামী অমিয় সরকার, মৃতার শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, জিয়াগঞ্জের কালিকূপের বাসিন্দা রাখি দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছিল। স্কুল যাওয়ার পথে জোনপুরের অমিয় সরকারের সঙ্গে মাস ছয়েক আগে সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে রাখি ও অমিয়র সম্পর্কের কথা জানতে পারে রাখির বাড়ির লোকজন। প্রথম অবস্থায় রাখি ও অমিয়র সম্পর্ক মেনে নেয়নি রাখির পারিবার। পরে মাস ছয়েক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিয়ে করে অমিয় ও রাখি। বিয়ের পর রাখির বাড়ির লোকজন তাদের মেনে নেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজেও লাগেন অমিয়। অভিযোগ, কাজে লাগার পরে অমিয় যাতায়াতের জন্য বাইক কেনার টাকা চেয়ে পাঠায় রাখির বাড়িতে। সেই মতো রাখির বাবা পরেশ মণ্ডল অমিয়কে বাইক কেনার জন্য পঞ্চান্ন হাজার টাকা দেয়। এ ছাড়াও মাঝেমধ্যেই রাখিকে দিয়ে টাকা চেয়ে পাঠাত অমিয়। সেই মতো মাঝে মধ্যেই দুই হাজার, তিন হাজার টাকা করে পাঠাত রাখির বাবা। তার পরে বেশ কিছু দিন থেকে অমিয় খাট ও সোনার গয়নার জন্য চাপ দিতে থাকে রাখিকে। সেই কথা রাখি বাড়িতেও জানায়। খাট ও সোনার গয়না বানানোর জন্য অমিয়র কাছে কিছু দিন সময় চেয়েছিল রাখির বাবা। কিন্তু খাট ও গয়নার জন্য প্রতি দিন রাতে মদ খেয়ে এসে অমিয় অত্যাচার করত রাখির উপর। এমনকি মারধর ও করত রাখিকে— বলে দাবি রাখির পরিবারের। রাখির মা সনকা মণ্ডল জানান, বিকেলে ফোন করে ফুচকা খেতে চেয়েছিল মেয়ে। সন্ধ্যার সময় ফুচকা নিয়ে মেয়ের বাড়ি যেতেই দেখেন ঘরে মেয়ের মৃত দেহ পড়ে আছে। তার পাশে পড়ে আছে ফাঁস লাগানো গামছা। বাড়িতে লোকজন কেউ নেই। পরে জিয়াগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
এ দিন রাখির বাবা পরেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘গয়না, খাট সব বানিয়ে পড়ে আছে। বলেছিলাম একটাই মেয়ে তাই সামনে মাসে একটা অনুষ্ঠান করে গয়না, খাট সব জিনিসপত্র দেব। কিন্তু ওই খাট, গয়না আর কে ব্যবহার করবে। আর ক’টা দিন সহ্য হল না। মেয়েটাকে মেরেই ফেলল।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে স্বাসরোধ হয়েই মারা গিয়েছে। তবে খুন নাকি আত্মহত্যা সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে। মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’