চালু হতে চলেছে ড্রপ বক্স।
আগামী বছরেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে জেলার একাধিক পুরসভার। আর তার আগেই নদিয়ার দক্ষিণ প্রান্তে শহুরে মানুষের মন বুঝতে ‘ড্রপ বক্স’-এর আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া শিবির। ডিসেম্বর মাস থেকেই সেখানে বাসিন্দাদের অভাব অভিযোগ, চাহিদার কথা কাগজে লিখে ড্রপ বক্সে ফেলতে বলবে পদ্ম শিবির।
দলীয় সূত্রের খবর, আসলে পুরভোটের দামামা বেজে ওঠার আগেই বিভিন্ন পুর এলাকার বাসিন্দাদের উন্নয়ন নিয়ে কতটা ক্ষোভ রয়েছে তা মাপতে চাইছে তারা। ডিসেম্বর মাস থেকেই দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় শুরু হচ্ছে ‘আপনার বক্তব্য, বিজেপির কর্তব্য’ নামে কর্মসূচী। বিজেপি সূত্রে খবর, পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলের তরফ থেকে রাখা হবে ‘ড্রপ বক্স’। সেখানেই থাকবে কাগজ এবং কলম। পুর-নাগরিকদের কাছে বিজেপি আবেদন জানাবে যাতে তাঁরা ওই কাগজে নিজেদের এলাকার সমস্যা, ক্ষোভ, চাহিদা লিখে জমা দেন। পুরবোর্ডের কোনও অনৈতিক কাজকর্ম বা দুর্নীতির বিষয় জানা থাকলেও তা লিখে বাক্সে ফেলতে বলা হবে। কাগজে লেখকের নাম, ওয়ার্ডের নম্বর ইত্যাদি লেখা থাকবে। এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের পরিচয় বাইরে পুরোপুরি গোপন রাখা হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, এলাকায় উন্নয়নের সমস্যা, নিকাশি-রাস্তা-জল নিয়ে অনেকের অনেক ক্ষোভ থাকে। সে সব কেউ শুনতে চায় না। বিজেপি সেই কথা শুনতে চেয়ে মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। এবং মানুষও সমস্যা বলার একটা জায়গা পেয়ে বিজেপি-র প্রতি আরও আস্থা পাবে। তাঁদের মনে একটা বিশ্বাস জন্মাবে যে, বিজেপি এলে তারা সমস্যার সমাধান করবে ও কথা শুনবে। ওই নেতার কথায়, ‘‘অনেক সময়েই মানুষ অনেক কারণে মুখ ফুটে অনেক কিছু বলে উঠতে পারে না। সেই না-বলা কথাই তাঁদের বলার জায়গা করে দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির।’’
নদিয়ার ১১টি পুরসভার মধ্যে দক্ষিণ দিকেই রয়েছে সিংহভাগ। আগামী বছরে জেলার ৮টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। চাকদহ এবং কৃষ্ণনগরে রয়েছেন প্রশাসক। এই পুর এলাকার বেশিরভাগটাই রানাঘাট এবং কল্যাণী মহকুমা জুড়ে। পুরভোটে জেলার পুরসভায় সে ভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে দেখা গিয়েছে, এই সব পুরসভার অধিকাংশ জায়গায় বিপুলভাবে এগিয়ে বিজেপি। তাই এ বার পুরভোটকে সামনে রেখে শহরাঞ্চলে শাসক শিবিরের ঘরে থাবা বসাতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই পুরসভাগুলির মধ্যে একমাত্র তাহেরপুর রয়েছে বামেদের হাতে। বাকিগুলিতে গত পুরভোটে জয়ী হয়েছে শাসক দল। বিজেপির হাতে জেলায় এখনও কোনও পুরবোর্ড নেই। ফলে তাঁরা সাফল্য পেতে মরিয়া।
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মানবেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “পুর এলাকায় মানুষের ক্ষোভ এবং চাহিদার কথা জানতে চাইছি আমরা ড্রপ বক্সের মাধ্যমে। শাসক দলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে লোকসভা ভোটে। তা ধরে রেখেই পুরভোটে জেলার পুরসভাগুলিতে জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”