লকডাউনে বিধি ভেঙে পথে রাম। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের গুরুত্বকে মান্যতা দিয়ে অযোধ্যায় রাম জন্মভূমির শিলান্যাসের দিনে মুর্শিদাবাদে অন্তত পথে নামবে না বিজেপি, এমনই আশ্বাস দিয়েছিলেন দলের জেলা নেতারা। তবে তা যে নিছক কথার কথা, বুধবার সকাল থেকেই তা টের পেয়েছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন পুর এলাকা। এ দিন সকাল থেকেই লকডাউন কিংবা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে পাড়ায় পাড়ায় রাম-পুজো, মিষ্টি বিতরণ, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মিছিল— বাদ যায়নি কোনটাই। আশ্চর্যজনক ভাবে পুলিশকেও নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে। বহরমপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায় আট-দশ বছরের বালকদের রাম সাজিয়ে স্কুটারে পাড়া ঘোরাতেও দেখা গিয়েছে। তাদের মুখে না ছিল মাস্ক, ইট-পুজোর ঘনঘটায় না ছিল দূরত্ববিধির সচেতনতা। এ ব্যাপারে পড়শিদের আপত্তি শুনে রে রে করে রামভক্তদের তেড়ে যাওয়ার খবরও মিলেছে। রঘুনাথগঞ্জ শহরে সকাল থেকেই স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে জনা পঁচিশ ঢাকিকে নিয়ে রামভক্তদের লম্বা লাইনও চোখে পড়েছে রামমন্দিরের শিলান্যাস উপলক্ষে।
বহরমপুরে বেশ কিছু ওয়ার্ডে, কোথাও রামের ছবি টাঙিয়ে, কোথাও বা রাম-সীতা সাজিয়ে ছেলেপুলেদের গেরুয়া পতাকার নিচে জড় করে নাচগান, লাড্ডু বিতরণ করলেন বিজেপির কর্মীরা। সৈয়দাবাদ ছাপাখানা মোড়ে রীতিমতো পুরোহিত ডেকে খোল করতাল সহযোগে রামের ছবি পুজো করলেন বিজেপির স্থানীয় নেতারা। সেখানে না ছিল একে অপরের মধ্যে দূরত্ব না ছিল ফেস কভারে মুখ ঢাকা। পাশাপাশি বিজেপি’রর জেলা নেতারা বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে এলেন এই উপলক্ষে। লকডাউনের মধ্যেও বাড়ির বাইরে পথচলতি মানুষদের মিষ্টি মুখ করালেন দাঁড়িয়ে থেকে। তবে, এ সবের মধ্যেও তাঁরা দাবি করে গেলেন—বিধিভঙ্গ হয়নি তো!
তা হলে লকডাউনকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না-ভাঙার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে?
সে প্রশ্ন এড়িয়ে বিজেপির মুর্শিদাবাদ (উত্তর) সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “এ দিন লকডাউন ঘোষণা করায় রাজ্যের মানুষ ভালভাবে নেননি। ভুমিপুজো শুরু হওয়ার পর বহরমপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। এর জবাব ব্যলটে আসবে।” আর, দলের জেলা সভাপতি (দক্ষিণ) সুজিত দাসের সাফাই, “লকডাউনকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে তো বিজেপির পক্ষ থেকে।” কী করে— তার ব্যাখ্যা অবশ্য তাঁর কাছে মেলেনি।