পুরস্কার হাতে সাত্যকি। নিজস্ব চিত্র
স্বপ্ন দেখত বাবা-ছেলে দু’জনেই। দু’চোখে সেই স্বপ্ন মেখেই ছেলের হাত ধরে ট্রেনে চেপে বসতেন বাবা। পাড়ি দিতেন কলকাতা।
সেই ছোট্টো হাতেই যে এক দিন সোনা ফলবে, উঠে আসবে আর্ন্তজাতিক সম্মান, সেটা কিন্তু স্বপ্নেও ভাবেননি তারা। গত ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় আয়োজিত ষষ্ঠ ‘কালচার অলিম্পিয়াড অব পারফর্মিং আর্ট’-এ অনুর্ধ্ব বারো বছর বিভাগের একক নাটক প্রতিযোগিতায় সোনা ছিনিয়ে নিয়েছে রানাঘাটের পালচৌধুরী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র বছর বারোর সাত্যকি নিয়োগী। তার কথায়, “সবটাই আমার বাবার জন্য। তবে আনন্দবাজার পত্রিকার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।”
কলম্বোর আর্ন্তজাতিক এই প্রতিযাগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ ঘটলেও শুধু মাত্র আর্থিক কারণে না যেতে পারাটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল সাত্যকির। সাত্যকির বাবা সুদীপ্ত নিয়োগী বলেন, “লক্ষাধিক টাকা খরচ। এত টাকা জোগাড় করা আমার পক্ষে কোনও মতেই সম্ভব হতো না। তাই না যাওয়ার জন্য মানসিক ভবে তৈরিই হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু ছেলেটার জন্য কষ্ট হচ্ছিল। তখনই আনন্দবাজার পত্রিকায় আমার ছেলের খবরটা প্রকাশিত হয়। তার পরই বিভিন্ন জায়গা থেকে সাহায্য আসতে শুরু করে।” সাধারণ মানুষ থেকে স্কুলের শিক্ষক, রানাঘাটের পুরপ্রধান থেকে শুরু করে বিধায়ক, বেসরকারি সংস্থা, সকলেই একে একে বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের হাত। বাবা-ছেলে পাড়ি দেন কলম্বো। মঞ্চস্থ করেন সুদীপ্তবাবুরই লেখা পাঁচ মিনিটের নাটক ‘মা’।
আর তাতেই ঝুলিতে উঠে আসে প্রথম পুরস্কার।