কেটে দেওয়া হয়েছে কলাগাছ। নিজস্ব চিত্র
খাস জমির দখলকে ঘিরে গুলি ও বোমাবাজিতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হোগলবেড়িয়া থানার বাঁশবেড়িয়া। মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন এসআই অনুপ পাল। গনপিটুনিতে জখম হয়েছে দুষ্কৃতীদলের সদস্য বরকুল শেখ। ওই ঘটনায় এক ব্যক্তি হয়েছে। তাণ্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
খাস জমির দখলদারি নিয়ে বছর দু’য়েক আগে কৃষ্ণগঞ্জের ঘুঘরাগাছিতে গুলি চলেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অপর্ণা বাগ নামে এক মহিলার। এ দিনের ঘটনা সেই স্মৃতিকেই যেন উস্কে দিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁশবেড়িয়া গ্রামের বড়জঙ্গল মৌজায় বিঘা দেড়েক খাস জমি রয়েছে। প্রায় বাইশ বছর ধরে সেই জমি চাষ করছেন গ্রামেরই জলিল ফকির। গত রবিবার ভিন গ্রামের কয়েকজন সমাজবিরোধী জোর করে সেই জমির দখল নেয়। সে দিন ওই দুর্বৃত্তেরা জমির কলাগাছ কেটে দেয়। বাঁশ ও পিলার পুঁতে ওই জমি তাদের বলে গ্রামের লোকজনকে জানায়। ফেরার সময় ওই দুষ্কৃতীকা জানিয়ে গিয়েছিল, দিন দুয়েকের পর ফের গ্রামে এসে তারা পাকাপাকি ভাবে জমির দখল নেবে। বিষয়টি সে দিনই হোগলবেড়িয়া থানায় জানিয়েছিলেন জলিল ফকির।
ঘোষনা মতো মঙ্গলবার সকালে নাটনার হাইদুল মণ্ডল ও বক্কর মণ্ডল বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু সমাজবিরোধীদের নিয়ে জমির পাকাপাকি দখল নিতে আসে। বিষয়টি জানতে পেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ও তেহট্টের এসডিপিও-র নেতৃত্বে বড় পুলিশ বাহিনী তড়িঘরি ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ জমির দিকে এগোতেই দুষ্কৃতীরা পুলিশকে বোমা- গুলি ছুড়তে থাকে। শেষমেশ পুলিশ ও গ্রামবাসীদের তাড়ায় পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) তন্ময় সরকার বলেন, “দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় পায়ে আঘাত পান পুলিশকর্মী অনুপ পাল। পালানোর পথে রবকুল শেখ নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রামের লোকজন ধরে পেটায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মূল অভিযুক্ত হাইদুল ও বক্কর মণ্ডলকে ধরা হয়েছে।’’
জলিল ফকির বলেন, “বাইশ বছর আগে এই খাস জমি ঝোপঝাড়ে ভরা ছিল। সাফ করে চাষ করতে শুরু করি। এ বার কলা চাষ ছিল। হাইদুল ও বক্কর কলাগাছ কেটে জমির দখল নেয়।’’ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মর্জেম শেখ জানান, খাস জমি এ ভাবে কেউ দখল করতে পারে না। তাই গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে প্রতিরোধ করেছে।